কলকাতা : দিল্লিতে বাঙালি শ্রমিকের স্ত্রী ও সন্তানের উপর নির্মম নিগ্রহ নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় দেশের রাজনীতি। দিনদুয়েক আগেই ভিডিও পোস্ট করে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কর্মী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে এই অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছিল দিল্লি পুলিশ। বুধবার সকালে নির্যাতিতাকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করল তৃণমূল। সেখানেই ভয়াবহ অত্যাচারের বর্ণনা দিলেন সাজনু পারভিন নামে ওই মহিলা।
মালদহের চাঁচোলের বাসিন্দা সাজনু। স্বামী মোক্তার খান। দীর্ঘদিন ধরেই সপরিবারে থাকতেন দিল্লিতে। মহিলার দাবি, একদিন চারজন তাঁর বাড়িতে যান। নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে আধার কার্ড দেখতে চান। খোঁজ করেন মোক্তারের। আধার কার্ড দেখানো সত্ত্বেও ওই যুবকেরা মহিলাকে বাংলাদেশি তকমা দেন। তাঁরা যাতে এলাকা না ছাড়েন সেই নির্দেশও দেওয়া হয়। এরপরের দিন ফের চার জন যায় তাঁর বাড়িতে। সেই সময় দলে ছিলেন ২ মহিলাও। তারাই সাজনু ও তাঁর সন্তানে এক জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে তার উপর অত্যাচার চালানো হয়। “আমাকে বাংলাদেশি বলা হয়। আমি বারবার বলি, আমি মালদহের বাসিন্দা। এরপর ওরা স্বামীকে ডাকতে বলে। শুরু করে বেধড়ক মার”, জানিয়েছেন তিনি।

নির্যাতিতার দাবি, প্রথমে জয় শ্রীরাম বললে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। তাতে তিনি রাজি না হওয়ায় চড়-থাপ্পড় মারা হয়। পেটে লাথি মেরে ছেলেকে কেড়ে নেওয়া হয়। মারধর করা হয় তাকেও। শিশুটির কান থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে। এরপর ২৫ হাজার টাকার দাবি করা হয় বলেই অভিযোগ। কোনওক্রমে স্বামীকে খবর দেন তিনি। এরপর শাশুড়ি টাকা নিয়ে গেলেও রেহাই মেলেনি। সকলকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। সেখানে চলে অত্যাচার।
সাজনু জানিয়েছেন, দিল্লি পুলিশ বলে, “পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা মানেই বাংলাদেশি।” কেড়ে নেওয়া হয় তাঁদের ফোন। একাধিক জায়গায় সই করিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের সহযোগিতায় ঘরে ফিরতে পেরে স্বস্তিতে সাজনুরা। মমতা সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। কলকাতায় এফআইআর করা হবে বলে জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে।




