কলকাতা : অতিসম্প্রতিই বিজেপি জোটশাসিত বিহারে ঘটে গিয়েছে এক হাড় হিম করা ঘটনা। পাটনার এক হাসপাতালের আইসিইউতে ঢুকে একজনকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এবার সেই হত্যাকাণ্ডে পুলিশের জালে আরও ৫ জন। সূত্রের খবর, কলকাতায় লুকিয়ে ছিল তারা। পুলিশ ও এসটিএফের যৌথ অভিযানে নিউটাউন সাপুরজি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাদের। মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলেই জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে পারস হাসপাতালে ঢুকে পড়ে কিছু দুষ্কৃতী। সটান আইসিইউতে ঢুকে ২০৯ নম্বর কেবিনে শুয়ে থাকা কুখ্যাত দুষ্কৃতী চন্দন মিশ্রকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি ছোনড়ে মূল শ্যুটার তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশারা। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালের বেডেই মারা যায় চন্দন। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, ওই কেবিনের অ্যাটেন্ড্যান্ট দুর্গেশ কুমারের পায়েও গুলি লাগে। মূল অভিযুক্ত বাদশার চার সহকারীর নাম প্রকাশ করে পুলিশ। তারা হল-আকিব মালিক, সোনু, কালু ওরফে মুস্তাকিম এবং ভিন্ডি ওরফে বলবন্ত সিং। তারা ফুলওয়ারি শরিফ ও বক্সারের বাসিন্দা। তাদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তৌসিফের বাড়ি ফুলওয়ারি শরিফের গুলিস্তান কলোনিতে। তবে সে আদতে বক্সারের বাসিন্দা। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফুলওয়ারি শরিফের দুর্গা মন্দির এলাকায় চলতি বছরের রমজানের সময় একটা শুটআউটের ঘটনাতেও তার নাম জড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, পাটনার একটি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছে তৌসিফ। তার মা-ও একজন শিক্ষিকা। বাবা একজন ব্যবসায়ী। তবে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েই অপরাধের দুনিয়ায় পা রাখে। পরবর্তীতে সুপারি নিয়ে খুন করার কাজ শুরু করে। তারপর ধীরে ধীরে নিজের একটি ‘গ্যাং’ বানায়। মূলত অল্পবয়সী ছেলেদের নিজের দলে নেওয়া শুরু করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।
জানা গিয়েছে, পাটনার সগুনা মোড় ও ভোজপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় নিহত চন্দনের গ্যাং জড়িত ছিল। চন্দন পুলিশের কাছে ওই গ্যাংয়ের দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে খবরাখবর দিয়েছিল। সেই আক্রোশেই তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। চন্দন বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা ছিল। এক ব্যবসায়ীকে খুনের দায়ে তার যাবজ্জীবন জেল হয়। সে বেউর জেলে ছিল। লিভারের সমস্যা হওয়ায় চন্দনকে প্যারোলে ছাড়া হয় হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করানো জন্য। তার প্যারোলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৮ জুলাই। ইতিমধ্যেই চন্দন মিশ্র খুনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। চন্দন মিশ্রের বাবা মন্টু মিশ্রের অভিযোগের ভিত্তিতে পাটনার শাস্ত্রীনগর থানায় একটি মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তাতে বলবন্ত, মনু এবং তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দুর্গেশের অভিযোগের ভিত্তিতে অন্য মামলাটি দায়ের হয়েছে।