কলকাতা: রাজস্থান থেকে শুরু করে দিল্ল, ওড়িশা পর্যন্ত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর চলছে অত্যাচার! অন্য রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের বাংলাদেশি দেগে করা হচ্ছে আটক। বারবার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে তৃণমূল। এবার এই অভিযোগেএ ভিত্তিতে নয়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ওড়িশায় আটক করা হয়েছে বাংলার প্রচুর শ্রমিককে। এবার এই বিষয়ে অবিলম্বে মুখ্যসচিবকে পদক্ষেপের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অবিলম্বে সচিবের নিচে নন এমন কোনও আধিকারিক নিয়োগ করতে হবে মুখ্যসচিবকে। ওই আধিকারিক ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
বাংলার শ্রমিকদের উপর ভিনরাজ্যে চলছে নির্যাতন। কখনও মারধর, কখনও তাঁদের উপর হামলা, লুটপাট, উপার্জন কেড়ে নেওয়া, কখনও আবার পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ শোনা গিয়েছে। এনিয়ে অভিযোগ জানালে স্থানীয় পুলিশের সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন।
এ নিয়ে পূর্বেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ওড়িশা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই মারধর করা হচ্ছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। আমাদের এখানেও কিন্তু দেড় কোটি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। তাঁরা বিভিন্ন রাজ্যের, বিভিন্ন ধর্মের। মনে রাখবেন, আপনারা অত্যাচার করেন। আমরা করি না। এটাই আমাদের আর আপনাদের মধ্যে তফাৎ। তাই বলছি, হিংসার তাস তুলে দেবেন না কারও হাতে। আমরা আপনাদের রাজ্যের শ্রমিকদের সুরক্ষিতই রাখব, কিন্তু কোথাও যদি কোনও সমস্যা হয়, কোনও বিশেষ সংগঠনের সদস্য এসে যদি তাঁদের হুমকি দেয়, সেই দায়িত্ব কিন্তু আমি নিতে পারব না।” পাশাপাশি বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর এহেন অত্যাচারকে অনিচ্ছাকৃত নয় বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য গঠিত কমিটির তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম তড়িঘড়ি তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাজ্যে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছেন। বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ইতিমধ্যে অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করেন দুই সাংসদ – ইউসুফ পাঠান ও সামিরুল ইসলাম। এবার এই বাংলার শ্রমিকদের ওপর অন্য রাজ্যে এহের নির্যাতনের ঘটনায় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।