আজমগড় : নারীনিরাপত্তার বেহাল দশা, দুষ্কৃতীরাজ তো রয়েছেই। এবার ফুটে উঠল যোগীরাজ্যের আরও একটি অন্ধকার দিক। প্রকাশ্যে এল কুসংস্কারের ভয়াবহতা। আজমগড়ে তান্ত্রিকের সাধনার সময় এক ৩৫ বছর বয়সী মহিলার রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের আজমগড় জেলার কান্ধরাপুর থানা এলাকার পাহলওয়ানপুর গ্রামে। অনুরাধা নামে ওই মহিলার বিয়ের ১০ বছর অতিক্রান্ত কিন্তু তাঁর কোনও সন্তান ছিল না। আধ্যাত্মিক উপায়ে মহিলাদের মা হতে সাহায্য করতে পারেন এমন দাবি শুনে তিনি তাঁর মাকে নিয়ে স্থানীয় এক তান্ত্রিকের কাছে যান। তান্ত্রিকের নাম চান্দু। মহিলা সেখানে পৌঁছলে তান্ত্রিক এবং তার সহযোগীরা দাবি করেছিলেন, যে অনুরাধার ওপর একটি অশুভ আত্মা ভর করেছে।
মৃতার পরিবারের দাবি, ক্রিয়াকলাপ চলাকালীন, তান্ত্রিক এবং তার সহযোগীরা তাঁর চুল টেনে ধরে, জোর করে ঘাড় এবং মুখ চেপে ধরে। শুধু তাই নয়, তাঁকে একটি ড্রেন এবং টয়লেটের নোংরা জল পান করতে বাধ্য করা হয়! ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহিলার মা তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোনভাবেই তাঁদের থামানো যায় নি। এর কিছুক্ষণ পরেই, অনুরাধার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়, যার ফলে তান্ত্রিক এবং তার সহযোগীরা তাঁকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপর তান্ত্রিকদের দল মৃতদেহ রেখে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরিবার অনুরাধার মৃতদেহ গ্রামে ফিরিয়ে আনে এবং এই তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। খবর পেয়ে কান্ধরাপুরের এসএইচও কে কে গুপ্তা এবং সিটি সার্কেল অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
নির্যাতিতার বাবা বলিরাম যাদব পুলিশকে জানিয়েছেন যে, অনুরাধাকে গর্ভধারণে সাহায্য করার জন্য তান্ত্রিক ১ লক্ষ টাকার চুক্তি করেছিল!২২,০০০ টাকা আগাম নিয়েছিল সে। বলিরামের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।
ইতিমধ্যেই মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু জানা গিয়েছে, তান্ত্রিক চান্দু থানায় আত্মসমর্পণ করে। তবে পুলিশ এখনও তার সহযোগীদের খুঁজছে। মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে, একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।