পূর্ণিয়া : অন্ধবিশ্বাস ও মধ্যযুগীয় বর্বরতার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠল আরও এক ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যে। ভয়াবহ ঘটনা ঘটল বিহারের পূর্ণিয়া জেলায়। ডাইনি অপবাদে একই পরিবারের ৫ জনকে খুন করে পুড়িয়ে দেহ লোপাটের চেষ্টা করা হয়! স্বাভাবিকভাবেই ছড়িয়েছে তুমুল চাঞ্চল্য। নৃশংস এই ঘটনার পর আরও একবার কাঠগড়ায় বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে পূর্ণিয়ার টেটগামা গ্রামে। কিছুদিন আগে গ্রামে একটি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপরেই সেই মৃত্যুর সঙ্গে ডাইনি সংযোগ রয়েছে বলে মনে করা হয়। এরপরেই ওই পরিবারের উপর আক্রমণ করে গ্রামবাসীরা। পরিবারটির তন্ত্রসাধনা করার সন্দেহ তাদের মধ্যে এতটাই প্রবল হয়ে ওঠে যে, রবিবার তারা একই পরিবারের পাঁচ সদস্য — বাবুলাল ওরাওঁ, সীতা দেবী, মনজিৎ ওরাওঁ, রানিয়া দেবী এবং তপ্তো মোসমাতকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হলেন মৃত বাবুলাল ওঁরাওয়ের ১৬ বছরের নাবালক সন্তান। জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর আতঙ্কে আশেপাশের বাড়িগুলি থেকে পালিয়ে গিয়েছে সকলেই।
চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখার পর ছেলেটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এই মুহূর্তে ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারছে না সে। এখনও কোনও অভিযোগ (এফআইআর) দায়ের করা হয়নি। ঘটনার একদিন পর, পুলিশ ডগ স্কোয়াড নিয়ে এলাকায় টহল দেয়। গ্রামবাসীকে প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগে ও খুনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নকুল কুমার নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাঁচটি মৃতদেহের মধ্যে চারটি পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে একটি পুকুর থেকে।
ইতিমধ্যেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নীতীশ কুমারের সরকারকে নিশানা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। “দুই দিন আগে সিওয়ানে এক গণহত্যায় তিনজন নিহত হন। ফের বক্সারে এক গণহত্যায় তিনজন নিহত হন। ভোজপুরে এক গণহত্যায় আরও তিনজন নিহত হন। অপরাধীরা সতর্ক, মুখ্যমন্ত্রী নির্বোধ”, লিখেছেন তিনি।