কলকাতা : ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেছিলেন বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ। এবার তাঁর তীব্র নিন্দায় সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন নিয়ে কেন্দ্রকে বুধবার একহাত নেন তিনি। সেই সময় এই ইস্যুতে মুখ খোলেন মমতা।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মানুষের সম্মান নিয়ে আপনারা খেলা করেন। আপনার মন্ত্রী, সাংসদরা কী সব কথা বলেন। সেনাদের নিয়েও কী বলেন, ম্যাডাম কুরেশিকে কী বলেছেন? যিনি পহেলগাঁওয়ের সময় দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ বলে উল্লেখ করেছিলেন। ওঁকে নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আপনার মন্ত্রী তাঁকেও ছাড়লেন না। পহেলগাঁও সন্ত্রাসের পর সকলে বিশেষ অধিবেশনের কথা বলেছিল, সেটা করেননি। আমাদের দল ৫টি প্রশ্ন করেছিল। কোনও উত্তর দেননি।”
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার জবাবে গত ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেই হামলার পর সাংবাদিক বৈঠক করে গোটা দেশকে অপারেশন সিঁদুরের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। এই ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায় মধ্যপ্রদেশের বিজেপি মন্ত্রী বিজয় শাহকে।
বিজয় বলেছিলেন, “ওরা আমাদের হিন্দু ভাইদের পোশাক খুলে ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে হত্যা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীজি ওদের (জঙ্গিদের) বোনকে ওদের বাড়িতে হামলার জন্য পাঠিয়েছেন। ওরা (জঙ্গিরা) আমাদের বোনকে বিধবা করেছে, তাই মোদীজি ওদের সম্প্রদায়ের বোনকেই ওদের পোশাক খুলে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন।”
মন্ত্রী কথায় সোফিয়া কুরেশির নাম না থাকলেও মন্তব্যটি যে তাঁকে উদ্দেশ্য করেই করা, তা বুঝতে বাকি ছিল না কারও। বিতর্ক তুঙ্গে উঠতেই বিজয় সাফাই দেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে নিন্দার মুখে পড়েন বিজয়। মধ্যপ্রদেশ রাজ্য বিজেপির তরফেও রীতিমতো তিরস্কার করা হয় বিজয়কে। অবিলম্বে বিজয় শাহকে মন্ত্রীপদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। বিজয়কে ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালতও।