কলকাতা : সোজা হয়ে তাকানোই হয়ে উঠেছিল দুঃসাধ্য। মেরুদণ্ড ধনুকের মতো বেঁকে গিয়েছিল মুর্শিদাবাদের এক কিশোরের। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, ৬৫ ডিগ্রি কোণে শিরদাঁড়া বেঁকে গিয়েছে তার। মেরুদণ্ড সোজা করার অস্ত্রোপচার খুবই কঠিন। বেসরকারি হাসপাতালে বিপুল খরচ করে এ অস্ত্রোপচার করার সামর্থ্য ছিল না ছেলেটির পরিবারের। এনআরএস হাসপাতালের(NRS Hospital) দ্বারস্থ হন তাঁরা।
Read More: ১৩ বছরের সম্পর্কে ইতি, বিদায়বেলায় রিয়াল মাদ্রিদকে আবেগঘন বার্তা মদ্রিচের
এনআরএস-এর(NRS Hospital) অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ কিরণকুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সফল হয়েছে অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছেলেটির যে সমস্যা ছিল, চিকিৎসা পরিভাষায় তার নাম স্কোলিওসিস। স্কোলিওসিস আক্রান্ত মেরুদণ্ডের ৩৩টি হাড়েই গঠনগত সমস্যা থাকে। মূলত বাড়ন্ত বয়সেই ছোটদের শরীরে এই সমস্যা দেখা যায়। যেমনটা হয়েছিল ছেলেটির। জন্ম থেকে যদিও এ অসুখ ছিল না তার। নয়-দশ বছর বয়স থেকে টের পান অভিভাবকরা। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শিরদাঁড়া আরও বাঁকতে থাকে।
ডাঃ কিরণকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মেরুদণ্ড খুব বেশি বেঁকে গেলে অস্ত্রোপচার করা বাধ্যতামূলক। শিরদাঁড়া খুব বেশি বেঁকে গেলে স্নায়ুতে চাপ পড়ে। তা থেকে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, হাঁটাচলায় সমস্যা তৈরি হয়। মেরুদণ্ড ৪০ ডিগ্রির উপর বেঁকে গেলেই তাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে ৬৫ ডিগ্রিতে বেঁকে ছিল। সেটাকে মেরামত করে আনা হয়েছে ১৪ ডিগ্রিতে।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1925879485934526941
প্রসঙ্গত, এ অস্ত্রোপচারে প্রথমে প্রোন পজিশন বা উপুড় করে শোয়ানো হয় রোগীকে। খুলে ফেলা হয় মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ডের যে অংশ বাঁকা তা ধরে ধরে দু’পাশে স্ক্রু লাগানো হয়। ধাতব রড দিয়ে ধীরে ধীরে সোজা করা হয় মেরুদণ্ড। অস্ত্রোপচারের পর বাহাত্তর ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয় রোগীকে। সম্ভব হলে পরের দিন থেকেই রোগীকে হাঁটানো হয়। ব্যথা সহ্য করতে পারলে অস্ত্রোপচারের পরের দিন থেকেই রোগীকে হাঁটানো হয়। মেরুদণ্ড সোজা করে লাগানো হয় টাইটানিয়াম স্ক্রু। এই স্ক্রু আর খুলতে হয় না পরবর্তীতে।




