নয়াদিল্লি: মোদী সরকারের দেওয়া তথ্যে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ বিরোধীদের। বর্ধিত হারে পেনশন(Pension )প্রদান বা মাসে ন্যূনতম পেনশনের পরিমাণ বৃদ্ধি, ইপিএফ নিয়ে সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলিয়ে রেখে দিয়েছে কেন্দ্র। এবার কর্মী পিএফের পেনশন নিয়ে খোদ সংসদে সরকারি তরফে আজব তথ্য প্রকাশের অভিযোগ আনল বিরোধীরা।
Read More: দীর্ঘ ৯ মাস পর পৃথিবীতে পা দিলেন সুনীতা-বুচ, নিরাপদে প্রত্যাবর্তন – জানাল নাসা
সম্প্রতি লোকসভায় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন করেছিলেন ডিএমকে সাংসদ টিআর বালু। তার লিখিত জবাবে সোমবার কেন্দ্রীয় শ্রম রাষ্ট্রমন্ত্রী শোভা করন্দলাজে জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে প্রায় ৪৭ লক্ষ ইপিএফ সদস্য মাসে ন’হাজার টাকার কম পেনশন পেয়েছেন।

স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই জবাবে চমকে উঠছে বিশেষজ্ঞ মহল। শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। কারণ শ্রমমন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ইপিএফে পেনশন(Pension )প্রাপকের সংখ্যা ৭৮ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৩৮ জন। তাহলে কি ৩১ লক্ষের বেশি উপভোক্তা মাসে ন’হাজার টাকার উপরে পেনশন পাচ্ছেন? উঠছে প্রশ্ন।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1902301766802387378?s=19
এদিন সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যানে সংশয় শুরু হয়েছে মন্ত্রকের অন্দরেই। আধিকারিকদের একাংশ স্পষ্ট জানাচ্ছেন, কোনও ইপিএফ গ্রাহক যদি সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কর্মজীবন শেষে অবসর নেন, তাহলেও তাঁর পেনশনের পরিমাণ মাসে ন’হাজার টাকা হবে না। এহেন প্রেক্ষিতেই মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেছে বিরোধীরা।
সরব হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। “ইপিএফ পেনশন নিয়ে মোদী সরকার অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছে। আজগুবি পরিসংখ্যান পেশ করে, গল্পের গোরুকে গাছে তুলে দায় এড়াতে চাইছে। বাস্তবে দেশজুড়ে অসংগঠিত ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা। এর অর্থ একটাই, দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ হচ্ছে”, সাফ জানান তিনি।
পাশাপাশি, লোকসভায় লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় শ্রম রাষ্ট্রমন্ত্রী একপ্রকার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, মাসে ইপিএফের ন্যূনতম পেনশনের পরিমাণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা আপাতত নেই। জানিয়েছেন, এই সরকারই ২০১৪ সালে ইপিএফের ন্যূনতম পেনশন বাড়িয়ে মাসে এক হাজার টাকা করেছে। তা বৃদ্ধির দাবিতে ইতিমধ্যেই শ্রমমন্ত্রকের কাছে যে একাধিক দাবিদাওয়া পেশ হয়েছে, সেকথা মেনে নিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ করেছেন ইপিএফও অছি পরিষদের প্রাক্তন সদস্য তথা এআইইউটিইউসির সর্বভারতীয় নেতা দিলীপ ভট্টাচার্যও। “মোদী সরকার আজগুবি তথ্যেই ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। ক্রমাগত বঞ্চনা এবং কেন্দ্রীয় উদাসীনতার শিকার হচ্ছেন গরিব শ্রমিক-কর্মচারীরা। মাসে ন্যূনতম পেনশনের পরিমাণ বৃদ্ধি তো পরের কথা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বর্ধিত ইপিএফ পেনশনই বা ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কোথায়? প্রায় ৪৭ লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র ১৬ হাজার ৫০০ জনকে সেব্যাপারে যোগ্য মনে করছে শ্রমমন্ত্রক”, বক্তব্য তাঁর।