এখন থেকেই আগামী ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে তৃণমূল। সর্বস্তরের সংগঠনকে আরও মজবুত করে তুলতে বদ্ধপরিকর ঘাসফুল শিবির। পিছিয়ে নেই তৃণমূলের সাইবার সংগঠন ‘ফ্যাম’ও। গত এক দশক ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের হয়ে লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল সমর্থকদের সর্ববৃহৎ সোশ্যাল মিডিয়া সংগঠন (এফ এ এম) কমিউনিটিতে প্রতি বছরের মতো এবারও নির্বাচনের মাধ্যমে হতে চলেছে রাজ্য কমিটি গঠন। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারের পাশাপাশি বিজেপির সর্বভারতীয় স্তরের আইটি সেলের মোকাবিলা করতে এখন থেকেই সাইবার সংগঠনকে ঢেলে সাজানো কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের
মাধ্যমে সারা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে থাকা তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া যোদ্ধাদের ও ফ্যামের সদস্যদের
ভোটের মাধ্যমে তৈরি হবে রাজ্য কমিটি। মূলত ৩টি পদে (সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) নির্বাচন হতে চলেছে। তারপর ৭ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রাজ্য কমিটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই নতুন কমিটি গঠনের পরেই আগামী বিধনাসভা ভোটকে সামনে রেখে প্রতিটি জেলা কমিটিতে রদবদলের পাশাপাশি বিধানসভা-ভিত্তিক কমিটি ঘোষণা করবে ফ্যাম।
Link: https://x.com/fam4tmc/status/1885650794537517529?s=46
এবিষয়ে ফ্যামের প্রতিষ্ঠাতা সৌরভ দাস জানিয়েছেন, “বিজেপি ২৬-এর ভোটে বাংলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করার টার্গেট নিয়েছে শুনলাম। আমরাও যথেষ্ট, তৈরি আছি। সারা রাজ্য জুড়ে প্রতিটি এলাকায় তৃণমূলের সাইবার কর্মী মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি বিজেপি আইটি সেলের কর্মীর পাল্টা আমাদের ১০ জন করে থাকবে। প্রতিটি বিধানসভায় আমাদের টিম তৈরি। বিজ্ঞেপির ১০০০ কোটি টাকা থাকতে পারে, তবে আমাদের মতো ওদের কাছে একটা মমতা নেই। দিদির প্রতি আমাদের আবেগ ও আমাদের অধিনায়ক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে লড়াইয়ের জেদ বিজেপিকে সর্বভারতীয় স্তরেও পরাস্ত করতে সক্ষম হবে। বিগত প্রতিটি নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপিকে ১০ গোল দিয়েছে ফ্যাম। এবারেও একই হাল হবে ওদের।”
পাশাপাশি, তৃণমূল আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্যের কথায়, “তৃণমূল কংগ্রেসের নিজস্ব আইটি সেল তৈরি হওয়ার আগে থেকে ফ্যাম সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করে চলেছে। এই সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে কাজ করেন। তৃণমূল কংপ্রেসের যে কোনও কর্মসূচির প্রচারে ফ্যামের সহযোগিতা
মেলে। আর তাই ফ্যাম যত সমৃদ্ধ হবে, তৃণমূল কংগ্রেসও তত সমৃদ্ধ হবে।” এই নির্বাচনের অন্যতম সভাপতি পদপ্রার্থী তাপস সাধুখাঁ জানান, “তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের একজোট করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ফ্যামের নির্বাচন প্রমাণ করে আমাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য। তৃণমূলের কর্মীরাই হল দলের প্রধান সম্পদ। বিজেপির কোটি টাকার এমপ্লয়ি থাকতে পারে, তবে আমাদের যোদ্ধা আছে। ওদের ৯-৬ চাকুরীজীবী আছে, আমাদের আবেগের ২৪×৭ কাজ করার মতো সৈনিক আছে। ফ্যামের এই নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য মানুষ যোগ্য সম্মান পেয়ে দিদির প্রচারের কাজের নেতৃত্ব দেবে।”
উল্লেখ্য, ফ্যামকে কেবল সমাজমাধ্যমে নয়, রাজনৈতিক ময়দানেও সরাসরি দেখতে পাওয়া
যায়। কদিন আগেই কলকাতা ও হাওড়া জেলায় হওয়া ‘ফ্যাম কনক্লেভ’-এ সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের উৎসাহিত করতে ফিরহাদ হাকিম, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শশী পাঁজা প্রমুখকে পাঠিয়েছিলেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, “দিদি বলেছেন, ফ্যাম হচ্ছে আমার ডান হাত, যেই
হাত দিয়ে বিজেপিকে রোখা সম্ভব।” সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এক দশক ধরে চলতে থাকা তৃণমূলের সমর্থকদের এই সংগঠনের প্রতিটি কাজই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে দেশজুড়ে।