আর মাত্র ঘণ্টাকয়েকের অপেক্ষা। আজই শুরু হচ্ছে বহুপ্রতীক্ষিত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। তার ঠিক প্রাকলগ্নে মঙ্গলবার মিলন মেলার চা-চক্রে বসল কার্যত চাঁদের হাট। ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা সম্পর্কে আগ্রহ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও কতটা বিস্তৃত, ইকো পার্কের গ্লাস হাউসে ফুটে উঠল সেই ছবি। এবারের মেগা সম্মেলনে যোগ দিতে আসছেন দুশোর বেশি বিদেশি প্রতিনিধি। বঙ্গে লগ্নির লক্ষে অংশ নিচ্ছে মোট ৪০টি দেশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ২৫ জন রাষ্ট্রদূত। করোনা-পরবর্তী সময়ের সমস্যা কাটিয়ে বিদেশি লগ্নিকারীদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে বাংলা। স্বাভাবিকভাবেই তৃপ্তির হাসি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। তিনি বলেছেন, “এটা খুব ইউনিক যে এত দেশ অংশ নিতে আসছে। আমি মানুষের চোখ দিয়ে সব কিছু দেখি। সম্মেলন কত বড় হবে মানুষ বলবে। সবাইকে বাংলায় স্বাগত।”
বুধবার সকালেই মমতার আহ্বানে শহরে আসছেন দেশের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি। আসছেন সজ্জন জিন্দাল। মঙ্গলবারের চা-চক্রে হাজির হয়েছিলেন রাজ্য তথা দেশের নামী শিল্পমহল। সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়া, তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, সঞ্জয় বুধিয়া, সঞ্জীব পুরী, প্রসূন মুখোপাধ্যায়, রুদ্র চট্টোপাধায়, রমেশ মিত্তাল, উমেশ চৌধুরীদের পাশাপাশি দেখা গেল বিভিন্ন দূতাবাসের কনসালদের। এবার সম্মেলনে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি হতে চলেছে আফ্রিকার। কেনিয়া কঙ্গো থেকে এসেছেন প্রতিনিধিরা। জার্মানি, জাপান থেকে আসছে শিল্পমহল। ইকো পার্কের উৎসারী গ্লাস হাউসটি আরও বড় করে তৈরি করা হয়েছে। এদিন আমন্ত্রিত ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু, ইন্দ্রনীল সেন, শশী পাঁজা ও প্রাক্তন সাংসদ ও সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। মূল কর্মসূচি কনভেনশন সেন্টারে। প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে।
উল্লেখ্য, সিআইআই ও ফিকির ১২০ জন শিল্পকর্তাও কলকাতায় আসছেন তাঁদের জাতীয় কর্মসমিতি ও বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নিতে। টাটা, রিলায়েন্স, আইটিসি ছাড়াও জ্যোতি ল্যাব, সানমার গ্রুপ, ভিসুভিয়াস গ্রুপের মতো নানা সংস্থার গন্তব্য হয়ে উঠেছে, বাংলা। এদিন চোখে পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের ব্যস্ততা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে শেষ মুহূর্তে আলোচনা সেরে নেন। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে সামনে রেখে শুভ সূচনা হবে বাণিজ্য সম্মেলনের। একদিকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, অন্যদিকে বাম আমলের দেনার ভার সামলে বাংলার শিল্পায়নে অনেকটা এগিয়েছেন মমতা। বিশেষ করে ক্ষুদ্রশিল্পে বাংলা এখন দেশে পয়লা নম্বর। বিকল্প পথে লক্ষ্য কোন অভিমুখে যাবে, তার আভাস মিলবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। মূল লক্ষ্য বিনিয়োগ ও বিপুল কর্মসংস্থান।