এবার বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রসঙ্গত, গঙ্গার ডলফিন বা শুশুক দেখতে গঙ্গার ধারে ভিড় জমাট বহু লোক। তবে বিগত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন কারণে গঙ্গা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শুশুক। প্যাঙ্গোলিন ও ফিশিং ক্যাট-ও বিলুপ্তপ্রায়। এই সকল প্রাণীদের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য বনদফতর। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এদের জীবন বিপন্ন। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিশদে জানতে সমীক্ষা চালিয়ে দ্রুত নেওয়া হবে পদক্ষেপ। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে রাজ্যের বনাঞ্চলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বনজঙ্গলের গাছপালাও।
এমতবস্থায় একটি বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে রাজ্য। এই মর্মে আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থা জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সি)–র থেকে ১০৪ কোটি টাকা লোন পেতে চলেছে সরকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুশুক, প্যাঙ্গোলিন ও ফিশিং ক্যাট রক্ষায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। হাওড়া, নদিয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ–সহ রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে গঙ্গায় ডলফিন দেখতে পাওয়া যায়। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার সাথে নজরদারি বাড়ানো হবে। ডলফিনের সংখ্যা যাতে বাড়ে, সে জন্যও যথেষ্ট পদক্ষেপ করা হবে। অন্যদিকে প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যা বাড়াতে কৃত্রিম ভাবে প্রজনন ঘটিয়ে সেগুলিকে জঙ্গলে আবার ছাড়া হবে। ফিশিং ক্যাট সংরক্ষণের জন্যও এই উপায় অবলম্বন করা হবে বলেই জানা গিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, গঙ্গায় যে সমস্ত ডলফিনের দেখা মেলে সেগুলি নদীর গভীরে বসবাস করে। তবে আগে যত সংখ্যায় তাদের দেখা পাওয়া যেত এখন অনেকটাই কম। এর অন্যতম বড় কারণ গঙ্গার দূষণ। এর ফলে ডলফিনের প্রজনন ক্ষমতা কমছে। মৃত্যুর কোলেও ঢলে পড়ছে তারা।

উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছরে বর্ধমানের কালনা অঞ্চলে কমপক্ষে ১০টি ডলফিনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জালে আটকেও অনেক ডলফিন মারা গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহলে আগে প্রচুর প্যাঙ্গোলিন দেখতে পাওয়া যেত। উই ও পিঁপড়ে খায় তারা। অতিরিক্ত মাত্রায় জঙ্গল সাফ করার ফলে প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যাও কমছে। বাংলা আরো একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হলো ফিশিং ক্যাট বা মেছো বিড়াল। হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ও উত্তর চব্বিশ পরগনা, মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে বেশি দেখা যায় তা। তবে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে বিপদ বাড়ছে ফিশিং ক্যাটের। গাড়ি চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে অনেকে। হাওড়া জেলাতে পথ দুর্ঘটনায় ১৬টির মৃত্যু হয়েছে। তবে এবার সবদিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র।




