বুধবার দার্জিলিংয়ে সরস মেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই উদ্যোগে এই প্রথম শৈলশহরে আয়োজিত হচ্ছে এই মেলা। এদিন উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট জানালেন, কোনওরকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। পাহাড়ে শান্তি আছে, শান্তি থাকবে। কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পাহাড়কে আর অশান্ত হতে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকার একটা টাকাও দেয় না। আমরাই সারা বছর কাজ করি। ওরা শুধু ভোট নিতে আসে। ওরা পাঁচ বছরে একদিন আসে। আমরা সারা বছর থাকি। পাঁচ বছর পর পর কেউ আসে নেতা হওয়ার জন্য। ওরা বোমা ফেলে আগুন লাগিয়ে চলে যায় ওরা পাহাড়কে জুমলা বানাতে চায়, আমরা চাই পাহাড়কে নিরাপদ দেখতে। এটাই ওদের সঙ্গে আমাদের তফাত। ”
একই সঙ্গে মমতা বক্তব্য, “আমরা চাই দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে অনীত থাপা এগিয়ে যাক।” এদিন গত ১২ বছরে পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার কী কী কাজ করেছে তথ্য-সহ তার খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই সময়কালে ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ১,৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে জিটিএকে। শুধু তাই নয় গোটা উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য গত ১৩ বছরে ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা খরচ করেছে রাজ্য সরকার। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এর আগে ৬ বার সরস মেলা শিলিগুড়িতে হয়েছে। এই প্রথম দার্জিলিংয়ে হচ্ছে। দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকেরা এখানে আসেন। এখানকার মহিলাদের হাতে তৈরি জিনিসপত্র তাঁরা পছন্দ করেন। ৫৬টি প্রকল্পে ১৬১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। যা উদ্বোধনও হয়েছে বুধবার। এদিন প্রায় ৫৬ হাজার মানুষের কাছে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পৌঁছে যাবে। এছাড়া আরও ৫০০ কোটি টাকার শিলান্যাস করা হয়েছে। নতুন প্রকল্পে ১২ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। কোথাও আর এই ধরনের কাজ হয়নি। এখানে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এই ধরনের অনেক কাজ করা হয়েছে। আমি খুশি যে আমাদের মহিলারা এগিয়ে এসে নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছেন।” উল্লেখ্য, শুধুমাত্র জিটিএ এরিয়াতেই ১১ হাজারের বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। এই সরস মেলায় ১৩৫টি স্টল রয়েছে। মেলা চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। দার্জিলিং চায়ের নাম ভাঁড়িয়ে নকল চা বিক্রি করছে, তা শীঘ্রই বন্ধ করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। চা-বাগানের শ্রমিকদের পাট্টা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার পাট্টা দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের চা-বাগানে। সেই সঙ্গে বাড়ি তৈরির জন্য এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা করে পাবেন তাঁরা।