মহানগরীতে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল ‘মিসাইল পার্ক’-এর দরজা। শহর কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হল ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস বা ইএম বাইপাসে ধারে গড়ে ওঠা সায়েন্স সিটি। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রযুক্তি দিবসে সেখানেই খুলে গেল মিসাইল পার্ক। দেশের মিসাইল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামকে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে প্রমাণ মাপের মিসাইল দিয়ে সাজানো হয়েছে এই পার্ক। ভারতের ৬টি ফ্ল্যাগশিপ মিসাইল রেপ্লিকাও রাখা হয়েছে সেখানে। এই ৬টি মিসাইলe হল – ব্রহ্মস, পৃথ্বী, মিশন শক্তি, আকাশ, অস্ত ও নাগ। পাশাপাশি এই পার্কে থাকছে দেশের মিসাইলম্যান তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের মূর্তিও। দর্শনার্থীরা এই মূর্তির সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই ভারতের মিসাইল প্রোগ্রাম সম্পর্কে বেজে উঠবে অডিও ক্লিপ। আপাতত হিন্দি-ইংরেজিতেই শোনা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই বাংলাতেও শোনা যাবে এই ক্লিপ। তবে প্রতিটি মিসাইলের গায়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ লেখা রয়েছে ৩টি ভাষায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতে ১৯৬০ সালে ভারতে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল মিসাইল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম। পরে ১৯৮৩ সালে এপিজে আবদুল কালামের নেতৃত্বে ইন্টেগ্রেটেড গাইডেড মিসাইল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম শুরু হয়। এই প্রোগ্রামের হাত ধরেই পৃথ্বী, অগ্নি, আকাশ ও নাগ তৈরি হয়েছিল। সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ‘ব্রহ্মস’ ও অ্যান্টি স্যাটেলাইট ক্ষেপণাস্ত্র ‘মিশন শক্তি’ তৈরির মাধ্যমে মিসাইল প্রযুক্তিতে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নেয় ভারত। এই পার্ক নিয়ে সায়েন্স সিটির ডিরেক্টর অনুরাগ কুমার জানিয়েছেন, “সাধারণতন্ত্র দিবসে মানুষ টিভির পর্দায় যা দেখেন, সেটাই সায়েন্স সিটিতে এবার থেকে চাক্ষুষ করা যাবে। আশা করি, এই মিসাইল পার্ক তরুণ প্রজন্মকে কেরিয়ার হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বেছে নিতে উৎসাহ দেবে। এই মিসাইল পার্ক দেখার জন্য আলাদা করে কোনও টিকিট লাগবে না।” পাশাপাশি জানা গিয়েছে, এই পার্কটি যৌথভাবে তৈরি করেছে ডিআরডিও-র কলকাতার ইউনিট ‘সেন্টার ফর মিলিমিটার ওয়েভ সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইসেস অ্যান্ড সিস্টেম’ ও ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়ামের ইউনিট। কার্যত তাঁরাই সায়েন্স সিটি চালান। এই সংগ্রহশালাও তৈরি করেছেন। এই মিসাইল পার্কেরর হাত ধরে আগামী দিনে সায়েন্স সিটিতে আগ্রহীদের সমাগম যে আরও বাড়তে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।