কেরালায় বিজেপির সঙ্গে সেটিং হয়ে গিয়েছে সিপিএমের। সম্প্রতি এই কথা প্রতিটি প্রচার সভায় বলছেন রাহুল গান্ধী। নিজের এই মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন ওয়ানাড়ের কংগ্রেস প্রার্থী। বলছেন, বিজেপি কংগ্রেসের ভোট কাটবে। ফলে লাভ হবে সিপিএম-সহ বাম ও গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট বা এলডিএফের। আর তাই নাকি একের পর এক দুর্নীতি মামলায় বেঁচে যাচ্ছেন সে রাজ্যের সিপিএম নেতারা। সোনা পাচার কেলেঙ্কারিতে নাম উঠেছিল মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের। তাঁর মেয়ে বীণা আবার ফেঁসেছেন তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার দুর্নীতিতে। এমন করে সমবায় ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি বা অন্যান্য বহু কাণ্ডে কেরালার সিপিএম নেতাদের ধরা হচ্ছে না। যেখানে দেশের দুই বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জেলে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ একতরফা জিতে গিয়েছিল। মোট ২০টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে জয় পেয়েছিল তারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাঁচ বছর আগে মূল ফ্যক্টর ছিল সবরীমালা কাণ্ড আর রাহুলের প্রথম বার ওয়ানাড়ে প্রার্থী হওয়া। মনে করা হয়েছিল রাহুল জয়ী হয়ে হবেন প্রধানমন্ত্রী। এবার কিন্তু সারা ভারতে কংগ্রেসের সেই হাওয়া নেই। রাহুলের ঝড়ও উঠছে না কেরালায়। আবার সবরীমালার মতো হাতে গরম ইস্যু নেই হাতের কাছে। ফলে কংগ্রেসের আসন কমার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু প্রশ্ন হল, সেই আসন কোন দিকে যাবে। এবার কি বিজেপি খাতা খুলতে পারবে দক্ষিণী এই রাজ্যে?
উল্লেখ্য, এবার তিরুঅনন্তপুরম, ত্রিচূড়, আলাপ্পুঝায় নাকি গেরুয়া শিবির জেতার মতো জায়গায়। ভডক্কারা বা কান্নুরেও নাকি লড়াইয়ে আছেন মোদি ব্রিগেড। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই আসনের বেশিরভাগই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। আর বিজেপি ভোট কাটতে শুরু করলে লাভের গুর খেয়ে যাবে বামেরা। যেমন তিরুঅনন্তপুরম। রাজ্যের রাজধানীর এই আসনে পর পর জিতে আসছেন শশী থারুর। তাঁর বিরুদ্ধে এবার বিজেপির রাজীব চন্দ্রশেখর শক্ত প্রার্থী। আছেন সিপিআইয়ের বর্ষীয়ান নেতা পন্নিয়ান রবীন্দ্রনও।
অন্যদিকে, আলাপ্পুঝায় কংগ্রেসের কে সি বেনুগোপাল প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপির হেভিওয়েট নেতা শোভা সুরেন্দ্রন। তিনি প্রচুর ভোট কাটবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর ফলে শেষ হাসি হাসতে পারেন বিদায়ী সাংসদ এ এম আরিফ। আবার, ত্রিচূড়ে বিজেপির প্রার্থী বিখ্যাত মালায়লী অভিনেতা সুরেশ গোপী। তিনি এবার ভাল ভোট পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই অবস্থায় আনন্দে লাফাচ্ছেন বামেরা। আসলে কেরালায় চিরকালই মাত্র এক থেকে দুই শতাংশ ভোটের হেরফেরে জয় পরাজয়ের নিস্পত্তি হয়। কিন্তু গত নির্বাচনে বিজেপি প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। সেই ধারা বজায় থাকলে লাল কেরালা আবার লালে লাল হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।