সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর চাকরি বাতিল হয়েছে একাধিক ছেলেমেয়ের। এবার তাদের কথা ভেবে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার আলিপুর কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “আজকে আমি সামনে প্রধান বিচারপতিকে পেলাম না। কিন্তু, আমার মনের ভাবনাটা বললাম। দরকার হলে তাঁদের আবার পরীক্ষা নিন কিন্তু, তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দিন। যারা অন্যায় করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। কিন্তু, নির্দোষরা যেন দোষের ভাগীদার না হয়। আইন মেনে তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দিন।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একটু ভেবে দেখতে বলব বিচারপতিদের। বিয়ে করে সংসার চালাবে কী করে, বাবা মাকে দেখবে কী করে? হঠাৎ চাকরি চলে গেলে ওরা খাবে কী? যারা অন্যায় করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আমার কোনও দয়া নেই তাঁদের প্রতি। দরকার হলে তাঁদের আবার পরীক্ষা নিন। আইন অনুযায়ী তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দিন। আমি খবরের কাগজে দেখলাম কেউ কেউ আত্মহত্যা করেছে। আমার মনটা ভারাক্রান্ত। কোর্ট যেমন বলে দেবে এই ছেলেমেয়েগুলোর জন্য আমরা বন্দোবস্ত করে দেব।”
বিরোধীদের একহাত নিয়ে তৃণমূলে সুপ্রিমো জানান, “আমি কোনও অন্যায় করলে আমার দু’গালে দু’টো চড় মারুন। আমি যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম কোনওদিন একটা সিপিআইএম ক্যাডারেরও চাকরি খাইনি। তাহলে তোমরা কেন খাচ্ছো? নীচুতলার কর্মীরা অন্যায় করলে তাদের শাস্তি দিন। দেওয়ার ক্ষমতা নেই কাড়বার ক্ষমতা আছে।” মমতা বলেন, “আমরা তো আইনজীবীদের উপর নির্ভর করি। বিচারপতিদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু, আমি অধিকার কাড়ার পক্ষে নই, অধিকার দেওয়ার পক্ষে।” এপ্রসঙ্গেই বাম আমলে হওয়া একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের কথা তোলেন মমতা। “বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন অন্যায় করে থাকলে শুধরে নেওয়ার সুযোগ দিন। তিনি তো চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি। আর এখন কথায় কথায় দেখি তিন হাজার চাকরি বাতিল। আরে সবাই তো আর অন্যায় করেনি। সবাই আমাদের তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা সরকারের লোক নয়। নীচে বসে যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু, আমি তো আর জজ নই যে কথায় কথায় অর্ডার দেব!”, স্পষ্ট বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।