বুধবার দেশের সাধারণ বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে নানান মহলে বইছে বিতর্কের ঝড়। বাজেটের ফলে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র সম্প্রদায়ের ভোগান্তির ইঙ্গিত দিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। মূল্যবৃদ্ধি ফের মাথাব্যথা বাড়িয়ে তুলেছে আমজনতার। পাশাপাশি, আয়করে ‘বিরাট’ ছাড় দিয়ে বাজেটে নতুন করকাঠামো ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন, নতুন কর কাঠামোই হবে ‘ডিফল্ট ট্যাক্স রেজিম’। অর্থাৎ, এই কাঠামোই সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। যদি কেউ পুরনো কাঠামোয় থাকতে চান তাহলে তাঁকে তাঁর পছন্দ জানাতে হবে। অর্থাৎ কারও উপরই জোর করে নতুন করকাঠামো চাপিয়ে দেওয়া হবে না। এখানেই সংশয়ে মধ্যবিত্ত করদাতারা। নতুন নাকি পুরনো, কোন করকাঠামোয় কর দেবেন তাঁরা? এ নিয়ে ঘনীভূত হয়েছে সংশয়।
প্রসঙ্গত, নয়া কাঠামোয় আয়কর ছাড়ের পরিধি বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এখন দুই কাঠামোতেই ৫ লক্ষ টাকা করযোগ্য আয় পর্যন্ত রিবেট মেলে। নতুন কাঠামোয় ট্যাক্স স্ল্যাবের সংখ্যা ৬ থেকে কমিয়ে ৫ করা হয়েছে। ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা। অর্থমন্ত্রী এদিন বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে গিয়ে জানান, নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা সব শ্রেণীর করদাতাদেরই সুবিধা হবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থায় যে ব্যক্তির ৯ লক্ষ টাকা বার্ষিক করযোগ্য আয় তাঁকে মাত্র ৫ শতাংশ হারে মোট ৪৫ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এরসঙ্গে সারচার্জ আলাদা। পুরনো ব্যবস্থায় ছাড়ের সুযোগ নেওয়ার পরও এই ব্যক্তিকে ৬০ হাজার টাকা আয়কর দিতে হত। নতুন কাঠামোয় চাকরিজীবী ও পেনশনভোগীদের স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চালু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আয়করের এহেন ছাড় যে ভোটের অঙ্ক মাথায় রেখে, তা বলাই বাহুল্য। অর্থনীতিবিদদের মতে, গত ৫ বছরে মূল্যবৃদ্ধি যে হারে ঘটেছে তাতে এই সামান্য ছাড়ে মধ্যবিত্তের খুব একটা লাভ হবে না। উপকৃত হবেন কেবল ধনীরাই। কারণ, সারচার্জের ঊর্ধ্বসীমা ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। তাছাড়া নয়া আয়কর কাঠামোয় বিনিয়োগের জন্য আলাদা করে কোনও ছাড় মিলবে না। এক জন বেতনভোগী কোথায় কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন, তা নিয়ে সরকারের কোনও মাথাব্যথা থাকবে না। মোট আয় যত, তার উপরেই আয়কর দিতে হবে। অর্থাৎ বিনিয়োগের জন্য আলাদা ভাবে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। সেটাই মধ্যবিত্তের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।