ঘনীভূত হল জট। ক্রমশ বাড়ছে রহস্য। সম্প্রতি ধর্মতলায় নওশাদ সিদ্দিকীর বিক্ষোভের পিছনে রয়েছে কোনও অন্য কারণ? নওশাদ সিদ্দিকীর ফোনে কী তথ্য লুকিয়ে? উঠছে প্রশ্ন। এবার ফরেন্সিক পরীক্ষার আবেদন জানালেন সরকারি আইনজীবীর। নওশাদ সিদ্দিকী-সহ আইএসএফ সমর্থকদের ধর্মতলা চত্বরে জমায়েতের ঘটনায় অভিযুক্তদের বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে তাঁদের ১৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও শুনানি চলাকালীন বিধায়কের জামিনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে একাধিক যুক্তি খাড়া করতে দেখা যায় তাঁর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। নওশাদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে আবেদন করেন, নওশাদ একজন জন প্রতিনিধি। তিনি পালিয়ে যাবেন না। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। এর পরেই তাঁর অভিযোগ, ঘটনার তদন্ততে কোনও অগ্রগতি নেই। গত ২২ জানুয়ারি থেকে ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তেমন ভাবে উল্লেখযোগ্য কোনও তদন্তই করেনি পুলিশ। তাহলে একজন বিধায়ককে ১১ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার যৌক্তিকতা কোথায়? প্রশ্ন তোলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
পাশাপাশির অন্য অভিযুক্তদের আইনজীবীরাও একই আবেদন জানান আদালতে। ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আসমা খাতুন অভিযোগ তোলেন, তাঁকে ১০ দিন সূর্যের মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি। মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর জন্যেও রাতে নিয়ে যেতে হয়। তাঁকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। এমনকি, তাঁর উপরে অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন আসমা। অন্যদিকে, অভিযুক্ত সেনাকর্মী আলামগীর হুসেনের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল ছুটিতে এসেছিলেন। ঘটনার দিন ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান। এটাই তাঁর দোষ!কিন্তু সরকার পক্ষের আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সকল অভিযুক্তদেরই জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন। তাঁর যুক্তি, ঘটনার দিন পাবলিক সার্ভেন্ট বা সরকারি কর্মীকে আঘাত করা হয়েছে, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ রয়েছে। এর পরেই আদালততে জানানো হয়, ঘটনার দিন ১৪ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের গুরুতর জখম। একজন পুলিশ অফিসারের মাথায় ৬ টা সেলাই পড়েছিল, একজন সার্জেন্টও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। এরপরেই সরকারি আইনজীবীর আর্জি, নওশাদের ২ টি ফোনেরই ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হোক। সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে এদিন শেষ পর্যন্ত বিচারক সৌনক মুখোপাধ্যায় নওশাদ-সহ বাকি অভিযুক্তদের আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। শুনানি শেষে সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুন্ডু মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের। “নওশাদের মোবাইল ফোনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। ইতিমধ্যে ফরেন্সিকের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে আদালতে। তাঁর থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে”, জানিয়েছেন তিনি।