ওপেনার শুভমনের দুরন্ত শতরান। রাহুল ত্রিপাঠীর ঝোড়ো ইনিংস। ব্যাটে-বলে অধিনায়ক হার্দিকের চমৎকার পারফরম্যান্স। পাশাপাশি পেসারদের তুখোড় বোলিং। এসবে ভর করেই টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় তথা নির্ণায়ক ম্যাচে কিউয়িদের ১৬৮ রানে হারাল ভারত। ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও সিরিজ পকেটে পুরে নিল টিম ইন্ডিয়া। বুধবার আহমেদাবাদে ভারতের ২৩৪ রানের সামনে দাঁড়াতেই পারল না নিউজিল্যান্ড। ১২.১ ওভারে মাত্র ৬৬ রানেই শেষ হয়ে গেল মিচেল স্যান্টনারদের ইনিংস। এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া। ওপেন করতে নেমে সাফল্য পেলেন না ঈশান কিষাণ। উইকেটের অন্য প্রান্তে আগ্রাসী মেজাজে দেখা গেল শুভমনকে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন তরুণ ওপেনিং ব্যাটার। বুধবার আহমেদাবাদেও উজ্জ্বল তিনি। শুধু শতরানই নয়, প্রতিপক্ষ বোলারদের কার্যত ব্যাট হাতে শাসন করলেন শুভমন। শেষ পর্যন্ত শুভমন অপরাজিত থাকলেন ৬৩ বলে ১২৬ রানে। ১২টি চার এবং সাতটি ছক্কায় সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। তিন নম্বরে নেমে ভাল খেললেন রাহুল ত্রিপাঠীও। ২২ বলের ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে চারটি বাউন্ডারি এবং তিনটি ওভার বাউন্ডারি-সহ এল ৪৪ রান। ১৩ বলে ২৪ রান করলেন সূর্যকুমার। মারলেন একটি চার এবং দু’টি ছয়। সূর্য দ্রুত সাজঘরে ফিরলেও ভারতের রান তোলার গতি আটকাতে পারেননি কিউয়িরা। সাবলীল ছন্দে পাওয়া গেল অধিনায়ক হার্দিককেও। পাঁচ নম্বরে নেমে ১৭ বলে ৩০ রান করলেন তিনি। চারটি চার এবং একটি ছয় এল তাঁর ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত শুভমনের সঙ্গে উইকেটে থাকলেন দীপক হুডা। ২ বলে ২ রান করলেন দীপক। ২৩৪ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস।
কিউয়িদের পক্ষে সফলতম বোলার মিচেল ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন টিকনার, সোধি। রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাল নিউজিল্যান্ড। ফিন অ্যালেনকে (৩) আউট করে প্রতিপক্ষ শিবিরে প্রথম আঘাত আনেন ভারত অধিনায়ক হার্দিক। বড় লক্ষ্যের সামনে প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। পর পর আউট হন ডেভন কনওয়ে (১), মার্ক চ্যাপম্যান (শূন্য), গ্লেন ফিলিপস (২), মিচেল ব্রেসওয়েলরা (৮)। ৪.৩ ওভারে মাত্র ২১ রানেই ৫ উইকেট হারায় কিউয়িরা। তখনই ভারতের সিরিজ জয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে যায়। বল হাতে হার্দিককে সঙ্গ দেন দুই তরুণ জোরে বোলার আরশদীপ সিংহ এবং উমরান মালিক। ভারতের বোলিং আক্রমণের সামনে দিশাহারা দেখাল নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের। দ্বিতীয় ওভারে আরশদীপ কনওয়ে এবং চ্যাপম্যানকে আউট করে কোণঠাসা করে দেন কিউয়িদের। সেই চাপ থেকে শেষ পর্যন্ত বেরতে পারলেন না স্যান্টনাররা। দলকে ভরসা দিতে পারলেন না অধিনায়কও। একটি চারের সাহায্যে ১৩ বলে ১৩ রান করে শিবম মাভির বলে আউট হন স্যান্টনার। একই ওভারে সাজঘরে ফিরলেন ইশ সোধিও (শূন্য)। উইকেটের অন্য প্রান্তে দলের হাল ধরার কিছুটা চেষ্টা করলেন ড্যারিল মিচেল। কিন্তু কোনও সতীর্থের থেকেই কাঙ্খিত সহযোগিতা পেলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ৩৫ রান এল তাঁর ব্যাট থেকে। একটি চার এবং তিনটি ছক্কা এল তাঁর ব্যাট থেকে। লকি ফার্গুসন (০), ব্লেয়ার টিকনারও (১) রান পেলেন না। পাশাপাশি বল হাতেও দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন হার্দিক। ১৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন তিনি। ১৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন আরশদীপ। ৯ রানে ২ উইকেট উমরানের। ১২ রান দিয়ে বাকি ২ উইকেট নিয়েছেন শিবম মাভি।