রোগের নাম ক্লোয়াকাল অ্যানোমালি। এই বিরল রোগে মলদ্বার, যোনিদ্বার এবং জরায়ুর চ্যানেল একসঙ্গে সংযুক্ত হয়ে থাকে। প্রতি ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজারের মধ্যে একজন মহিলা এই রোগে আক্রান্ত হন। সেই দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছিলেন বর্ধমানের কালনার ১৯ বছরের তরুণী। তাঁর যোনি ছিল না। জরায়ুর গঠনও ছিল অসম্পূর্ণ। বয়স বাড়লেও ঋতুস্রাব হত না। স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণের ক্ষমতাও ছিল না। কিছুদিন আগেই প্রচণ্ড পেটব্যথার কারণে দেখাতে গেলেই সমস্যাটা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা দেখেন, মেয়েটির যোনিদ্বার নেই। ডিম্বাশয়-ফ্যালোপিয়ান টিউব থাকলেও জরায়ু নেই। যোনি না থাকার কারণে শারীরিক মিলন করাও সম্ভব ছিল না। এমন অবস্থা থেকে তরুণীকে বাঁচার রাস্তা দেখান নদিয়ার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালের অভিজ্ঞ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা। আধুনিক অস্ত্রোপচারে কৃত্রিম যোনি ও জরায়ু তৈরি করে নজির গড়েন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, কৃত্রিমভাবে যোনি ও জরায়ু তৈরি করার অস্ত্রোপচারকে বলে ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল ভ্যাজাইনোপ্লাস্টির সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি ম্যাকিন্ডো টেকনিকের প্রয়োগ করেছেন। আগে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য ভিন রাজ্যে যেতে হত। বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যে ছুটতে হত রোগীদের। এখন বাংলার আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান এতটাই এগিয়ে গেছে যে জেলার হাসপাতালেও জটিল থেকে জটিলতর সার্জারি হচ্ছে। নদিয়ার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল ম্যাকিন্ডো পদ্ধতিতে ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি করে নজির গড়েছে। ডাক্তারবাবু বলছেন, ওই তরুণীর এই সমস্যা ছিল জন্মগত। যে মহিলাদের যোনি থাকে না এবং জরায়ুর গঠন অসম্পূর্ণ তাদের রকিটানস্কি-কাস্টার-হোজার সিনড্রোমও হয়। রকিটানস্কি সিনড্রোম থাকলে ঋতুস্রাব হয় না, যৌন মিলন করা অসম্ভব ব্যাপার। তখন কৃত্রিম উপায় যোনি তৈরি করার দরকার পড়ে। এই সার্জারি অত্যন্ত জটিল। সেখানেই বড় সাফল্য পেয়েছে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল।