ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে যোশীমঠের ফাটল-পরিস্থিতি। কদিন আগেই যোশীমঠের দু’টি বড় হোটেল ভেঙে ফেলেছিল প্রশাসন। এ বার যোশীমঠের জেপি কলোনিও ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল তারা। উত্তরাখণ্ড সরকার জানিয়েছে, “জেপি রেসিডেন্সিয়াল কলোনি’র ক্ষত এতটাই যে নতুন করে মেরামতি সম্ভব নয়। ওই এলাকার মাটি অন্তত ৭০ সেন্টিমিটার বসে গেছে। বাড়িতে বাড়িতে ফাটল। রাস্তাঘাটে ফাটল ধরেছে। তাই কলোনি সম্পূর্ণ ভেঙে না ফেললে আরও বড় বিপর্যয় হতে পারে।” যোশীমঠের এলাকা পরিদর্শনের পরই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যোশীমঠে দ্রুত হারে ভূমিধস হচ্ছে। যোশীমঠের জেপি কলোনির ব্যাডমিন্টন কোর্টের ভিতরে ও আশেপাশে কমপক্ষে ৭০ সেন্টিমিটার মাটি ধসে গেছে। মনোহর বাগে ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার মাটি ধসে গেছে। প্রতিদিনই যেমন ফাটলের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনই পুরনো ফাটল আরও চওড়া হচ্ছে। শুধু বাড়িই নয়, এলাকার কালভার্টেও ফাটল ধরেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এতটাই বেশি যে আর পুনর্নিমাণ সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগেই যোশীমঠের দু’টি সবচেয়ে বড় হোটেল, ‘মাউন্ট ভিউ’ এবং ‘মালারি ইন’ ভেঙে ফেলে প্রশাসন। এবার জেপি কলোনিরও একই অবস্থা হতে চলেছে। একটি মন্দির ভেঙে পড়েছে ইতিমধ্যেই। তবে সেটি পরিত্যক্ত হওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি, শহরের রাস্তা থেকে চাষের জমি, বহু জায়গাতেই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বড় বড় ফাটলের মুখ। কোথাও আবার ফাটল চুঁইয়ে বেরিয়ে আসছে ভূগর্ভস্থ জলের ধারা। উল্লেখ্য, পুরনো ভূমিধ্বসের উপর তৈরি হয়েছিল চামোলি জেলার এই শহরটি। এই কারণেই বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় যোশীমঠ। এই আবহে বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞের দল গঠন করা হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। রিপোর্ট বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে অন্তত ১২৮টি ধসের মুখে পড়েছে চামোলি-যোশীমঠ এলাকাটি। ২০২১ সালে উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে কাদা-ধসের বন্যায় তলিয়ে গিয়ে প্রায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তখন থেকেই বড় বড় ফাটল নজরে এসেছিল। কিন্তু যোশীমঠ ও তার আশপাশের এলাকায় নির্মাণকাজ বন্ধ না হওয়ায় ফাটল আরও চওড়া হয়ে তলিয়ে যেতে বসেছে পুরো শহর। ফলত আশঙ্কাগ্রস্থ বাসিন্দারা।