একুশের বিধানসভা ভোটের আগে যেমন ভিনদল থেকে বিজেপিতে আসার হিড়িক শুরু হয়েছিল, ঠিক তেমনই ভোটের পর দলে দলে গেরুয়া শিবির ছেড়ে বেরিয়েও গিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু আসা, যাওয়ার দরজা বন্ধ করে রাজনৈতিক দল চলে না! রাজ্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বৈঠকে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে দিল্লীর এই বার্তাই শুনিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল। মঙ্গলবার রাজারহাটে বিজেপির তিন দিনের প্রদেশ প্রশিক্ষন শিবিরের দ্বিতীয় দিনে একথা বলেন সুনীল বনশল। রাজনৈতিক মহলের মতে, পূর্বসূরী কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে দিয়ে অমিত শাহরা তৃণমূল ভাঙিয়ে, বাংলা দখলের যে কৌশল নিয়েছিলেন, তার ব্যাটন বদলালেও, নীতিগত কোন পরিবর্তন হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম রাজ্য বিজেপির প্রশিক্ষন শিবির উপলক্ষে বাংলায় পা রাখলেন সুনীল বনশল। যোগী রাজ্যে দলের নির্বাচনী সাফল্যের পেছনে তার অবদানকে গুরুত্ব দিয়েই তাকে বাংলায় পাঠান অমিত শাহ। আর, সেই দায়িত্ব রূপায়ণে কেন্দ্রের মনোভাব মঙ্গলবার রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন বনশল। সুকান্ত, শুভেন্দু, দিলীপদের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে বনশল বললেন, ‘দলের বিস্তার করতে হবে। তার জন্য দরজা খোলা রাখতে হবে। দরজা, জানালা বন্ধ করে কোন রাজনৈতিক দল চলে না। রাজনৈতিক দলে আসা যাওয়ার দরজা বন্ধ করা যায় না।’
বনশলের এই বার্তা যে আসলে সুকান্ত-দিলীপদের উদ্দেশে শাহের বার্তা তা স্পষ্ট। কারণ রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীন সমীকরনে সুকান্ত-দিলীপে যে দ্বন্দই থাক না কেন, অন্যদল বিশেষত তৃণমূল থেকে নেতা এনে বিজেপিকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে অনীহা আছে দুজনেরই। যদিও ২০২১ কে ‘নাউ অর নেভার’ ধরে নির্বাচন লড়তে নামা মোদী-শাহের প্রবল চাপের কাছে মাথা নোয়াতে হয়েছিল দিলীপের বিজেপিকে। কিন্তু একুশে বাংলায় ক্ষমতা দখল অধরা হতেই কেন্দ্রীয় লাইনের বিরুদ্ধে তোপ দাগা শুরু করে দিলীপ শিবির। যার জেরে শেষ পর্যন্ত আচমকাই তাঁকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে নয়া রাজ্য সভাপতি হয়ে সেই দিলীপকেই অনুসরণ করতে শুরু করেন সুকান্তও। এবার বনশলকে দিয়ে রাজ্য বিজেপির কাছে কেন্দ্রের অবস্থান আবারও স্পষ্ট করে দিলেন শাহ-নাড্ডা।