২০০২ সালে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাত জুড়ে। আর সেই সময়েই গণধর্ষণ করা হয় ২১ বছর বয়সি বিলকিস বানোকে। সেই বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডের ১১ জন দোষীকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। তা নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যেই এবার গুজরাতের গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার মামলায় হস্তক্ষেপ চেয়ে হওয়া ১১টি আবেদনকে বকেয়া মামলার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। মামলাগুলি ২০০২-০৩ সাল থেকে বিচারাধীন ছিল। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ বলেছে, ইতিমধ্যে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ওই আবেদনগুলি এতদিনে অকার্যকর হয়ে গেছে।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ উল্লেখ করেছে যে মামলাগুলিতে আবেদন করা হয়েছিল দাঙ্গার তদন্ত সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা, যা হাইকোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছেও একটি পিটিশন করা হয়েছিল। গুজরাতের সেই দাঙ্গায় বিলকিস বেগমকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের ১৪জনকে খুনে দোষী সাব্যস্ত ১১ জনকে গত ১৫ অগস্ট মুক্তি দেয় গুজরাত সরকার। সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে সুপ্রিম কোর্টের নাম। সর্বোচ্চ আদালতের দু’জন বিচারপতির বেঞ্চ গুজরাত সরকারের এই সংক্রান্ত আবেদন মঞ্জুর করেছিল। এখন দোষীরা মুক্তি পাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টেই ফের মামলা হয়েছে, গুজরাত সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের। সর্বোচ্চ আদালত গত সপ্তাহে গুজরাত সরকারের বক্তব্য তলব করেছে।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট এবং জেবি পারদিওয়ালাও ছিলেন। বেঞ্চের বক্তব্য, আদালত একটি বিশেষ তদন্ত দল (সিট) গঠন করেছিল। সিটকে নয়টি বড় অভিযোগের তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছিল। সেগুলির বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এখন তাই আর সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই। সিটের পক্ষে উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহতগি উল্লেখ করেন যে ওই নয়টি মামলার মধ্যে আটটিতে বিচার শেষ হয়েছে। শুধু নরোদা গাঁও মামলায় বিচার মুলতুবি রয়েছে। বেঞ্চ বলে যে আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত কৌঁসুলি এটাও মোটামুটিভাবে স্বীকার করেছেন যে বিষয়গুলি এখন অকার্যকর হয়ে উঠেছে। এবং শুধুমাত্র একটি বিষয়ে যেখানে মুম্বইয়ের মানবাধিকার কর্মী তিস্তা সেতালবাদের সুরক্ষা সংক্রান্ত মামলাটি চালু থাকবে।