অনন্য নজির স্পর্শ করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সারা দেশের ইতিহাসে এমনটা হতে চলেছে প্রথমবার। মারণরোগ ক্যান্সারের কারণে, শরীরে যে তীব্র যন্ত্রণা হয় সেই যন্ত্রণার উপশমে চিকিৎসা এবার মিলবে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। সেই সঙ্গে আরও প্রায় ৭০ ধরনের ব্যাথার চিকিৎসাও পাবেন রোগীরা। দেশের মধ্যে এই প্রথম কোনও রাজ্যে সাধারন মানুষকে নিখরচায় ব্যাথার চিকিৎসা প্রদান করছে রাজ্যের কোনও সরকারি প্রকল্প। এখনও পর্যন্ত বাংলা ভিন্ন দেশের আর কোনও রাজ্যে কোনও সরকারি প্রকল্পে নিখরচায় শরীরের ব্যাথার চিকিৎসা প্রদান করা হয় না। কাজেই এই ক্ষেত্রে দেশকে পথ দেখা বাংলা। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বাংলার মানুষ এবার থেকে ক্যান্সারের ব্যাথা সহ প্রায় ৭০ ধরনের ব্যথার চিকিৎসা পাবেন বিনামূল্যেই। তার মধ্যে থাকছে রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেশন, রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেশন ফর ফ্যাসেট জয়েন্টস, ইউএসজি গাইডেড পেরিফেরাল নার্ভ ব্লকসহ অজস্র জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা।
পাশাপাশি, ব্যথার বিভিন্ন চিকিৎসাভেদে ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬৫ হাজার টাকার পর্যন্ত খরচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই নতুন প্যাকেজে। এতে শুধু নতুন বহু চিকিৎসাই যুক্ত হয়নি, চিকিৎসা খাতে বেসরকারি হাসপাতালের প্রাপ্য খরচের সংশোধনও করা হয়েছে। গোটা বিষয়ে উচ্ছ্বসিত রাজ্যের ব্যথার চিকিৎসকরা। তাঁদের প্রায় সকলের একমত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে কার্যত এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। চিকিৎসকদের অভিমত, এই পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে সব থেকে বেশি উপকৃত হবেন রাজ্যের ক্যান্সার আক্রান্ত বাসিন্দারা। এমনিতেই ক্যান্সারের চিকিৎসা বেশ ব্যায়বহুল। তার ওপর সহ্য করতে হয় প্রবল শারীরিক যন্ত্রণা। সেই যন্ত্রণার উপশমও বেশ খরচসাপেক্ষ যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি পেরে ওঠে না। দবাংলায় এখন ব্যাথার জন্য যত মানুষ কষ্টের সন্মুখীন হন, দেখা যায় তার মধ্যে ৪০ শতাংশ মানুষ দেখা যায় ক্যান্সারে আক্রান্ত। শরীরে যে মারণব্যাধি বাসা বেঁধেছে সেটাও আবার তাঁদের অনেকেই জানেন না। রাজ্য সরকারের এই নতুন চিকিৎসা পরিষেবার কল্যাণে উপকৃত হবেন তাঁরা।