কিছুদিন আগেই ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট করে লড়াই করা উচিত। কিন্তু রবিবার রাজস্থানের উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের শেষদিনে সেই পরামর্শ উড়িয়ে দিয়ে রাহুল গান্ধী এই মন্তব্য করেছেন যে, ‘আঞ্চলিক দলগুলির কোনও নীতি বা আদর্শ নেই।’ আর এতেই ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলি। কংগ্রেসকে পালটা দিয়ে তাদের প্রশ্ন, ‘নীতি-আদর্শ ছাড়াই আমরা এতদিন দল চালাচ্ছি নাকি?’
গত শুক্রবার অর্থাৎ ১৩ মে রাজস্থানের উদয়পুরে শুরু হয় কংগ্রেসের চিন্তন শিবির। চলে ১৫ মে পর্যন্ত। আর সে দিনই রাহুল দাবি করেন, বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র কংগ্রেসই। কোনও আঞ্চলিক দল নয়। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা আদর্শের। আর আঞ্চলিক দলগুলির কোনও আদর্শ নেই। বিজেপিকে হারাতে হলে তাই কংগ্রেসকে কংগ্রেসের মতো করেই লড়তে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। এরপরেই আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেস নেতাকে একেবার ধুয়ে দিয়েছে।
তৃণমূল আগেই বলেছিল, কংগ্রেস ভুলে যাচ্ছে, দেশে যেমন জমিদারি প্রথা রদ হয়েছে, তেমন রাজনীতিতেও কংগ্রেসের জমিদারি আর নেই। নীতি বিসর্জন দিয়েই কংগ্রেসের আজ এমন দুর্দশা। পাশাপাশি, একের পর এক কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে আরজেডি, জেএমএম-সহ অন্যান্য বিজেপি বিরোধী অঞ্চলিক দলগুলি। যেমন রাহুলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে আরজেডির মুখপাত্র মনোজ কুমার ঝা বলেন, ‘গত নির্বাচনগুলিতে আঞ্চলিক দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে যেভাবে লড়াই করেছে তা দেখুন রাহুল গান্ধী। তাঁর বক্তব্য কংগ্রেসের অবস্থানের সঙ্গে মিলছে না।’
আবার রাহুলের মন্তব্যে ক্ষোভপ্রকাশ করে ইউপিএ-র শরিক দল হেমন্ত সোরেনের জেএমএম-এর বক্তব্য, ‘নিজের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে রাহুল গান্ধীর। কিন্তু নীতি-আদর্শ নিয়ে এমন মন্তব্য করার অধিকার তাঁকে কে দিয়েছে। নীতি-আদর্শ ছাড়াই আমরা এতদিন দল চালাচ্ছি নাকি?’ অন্যদিকে, ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা তথা কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার কটাক্ষ, যে দলটা শিবসেনা, পিডিপি-র মতো বিজেপি-সঙ্গীর হাত ধরতে পারে, তারা কিনা বলছে আঞ্চলিক দল বিজেপির মোকাবিলা করতে পারবে না নীতি আদর্শ না থাকায়।