সারা বাংলাজুড়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে ‘সমাজ সাথী’ প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোনও সদস্যের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় এই প্রকল্পে। রাজ্য সরকারের হিসেব অনুযায়ী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় ১ কোটি সদস্যকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এই সদস্যদের মধ্যে কেউ দুর্ঘটনায় আহত হলে ৬০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটলে দু’লক্ষ টাকা সাহায্য ছাড়াও তাদের পরিবারে কোনও পড়ুয়া থাকলে অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য দেওয়া হয় আড়াই হাজার টাকা। রাজ্যে এখন মোট ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। মোট সদস্যের সংখ্যা প্রায় এক কোটি। অর্থাৎ সমস্ত সদস্যকেই এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এই আর্থিক সহায়তা দেওয়ার খরচ সম্পূর্ণভাবে বহন করে রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সংযুক্তি দপ্তর। সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত এই খাতে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
উল্লেখ্য, শনিবার নিউটাউনে সবলা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এসব সদস্যের পরিবারের হাতে সমাজ সাথী প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়াই। এই প্রকল্প সেই কাজেরই অন্যতম উদাহরণ। স্বনির্ভর গোষ্ঠী অনেক সময় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। তাদের যাতে সেই ঋণের সুদ বাবদ ২ শতাংশের বেশি না দিতে হয়, তার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঋণবাবদ সুদের বৃহৎ অংশ মিটিয়ে দিতে চলতি অর্থবর্ষে রাজ্য প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচে করেছে। আগামী অর্থবর্ষে এই অর্থের পরিমাণ আরও বাড়ানো হতে পারে। শনিবার সবলা মেলার উদ্বোধন করেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা ও প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সবলা মেলায় এবার অংশগ্রহণ করছে প্রায় ১০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং ১৩৩ জন হস্তশিল্পী। ২৬০টি স্টল হয়েছে। মেলা চলবে আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।