রীতিমতো শিরে-সংক্রান্তি! একুশের বিধানসভা ভোটের পর থেকেই দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বিজেপি। একে একে দল ছেড়েছেন একাধিক নেতা-বিধায়করা। উপনির্বাচন ও কলকাতা পুরভোট পার করে বিজেপিকে এখনও তাড়া করছে অন্তর্কলহের ভূত। সম্প্রতি বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়িয়েছেন খড়গপুর সদরের বিধায়ক অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। এই ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। হিরণ জানিয়েছেন, তিনি উন্নয়নের সঙ্গে থাকতে চান। যা নিয়ে এবার চড়া সুর শোনা গেল বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়।
এপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, দলের কাজে ডাকা হলেও, পাওয়া যায়নি হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে। দলের মিটিং-মিছিলে তিনি অংশ নেন না বলে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। আর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, তিছু হলেই গ্রুপ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন কেউ কেউ, তাতে কারও কিছু করার নেই। উল্লেখ্য বেশ কয়েকজন মতুয়া বিধায়ক বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার পরে খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার বিষয়টি সামনে আসে। বিষয়টিকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিষয়, যা দলের অন্দরেই মিটিয়ে ফেলার পক্ষেই মত প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে দেখা গিয়েছে, বিজেপির মতুয়া বিধায়করা একে একে মত মদল করছেন। তাঁরা সংবাদ মাধ্যমের সামনেই বিষয়টি নিয়ে মত প্রকাশ করতে অস্বীকার করছেন। সেই পরিস্থিতিতে বিজেপির তরফে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস মিলেছে।
খড়গপুরের বিধায়ক হিরণের অভিযোগ মূলত দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। তিনি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো দল চালানোর অভিযোগ করেছেন। খড়গপুরে কর্মসূচী সম্পর্কে তাঁকে কিছু জানানো হয় না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এছাড়াও এলাকাতেই কাজ করতে গিয়ে তাঁকে চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। এব্যাপারে হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ খড়গপুরের দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ‘হিরণ নিখোঁজ’ এমন পোস্টার সাঁটানোরও বিরোধিতা করেছেন খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক। দিল্লীতে গিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার বিষয়টি নিয়ে জানানেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি, তারপরেই তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার সিদ্ধান্ত বলেই ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর। হিরণ বলেছেন, তিনি উন্নয়নের সঙ্গেই রয়েছে। বর্তমানে যাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা সবাই উন্নয়নের ডাক দিয়েই ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। তবে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি হিরণ। এ নিয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে তাদের কটাক্ষ, এ রাজ্যে বিজেপির পতন কেবল সময়ের অপেক্ষা।