স্থানীয়দের বিক্ষোভ, বিরোধীদের কটাক্ষ তথা রাজ্য সরকারের প্রস্তাব। কোনও কিছুকেই তোয়াক্কা করল না কেন্দ্র। নাগাল্যান্ডে আরও ছ’মাস বাড়িয়ে দেওয়া হল বিতর্কিত সেনার বিশেষ অধিকার আইন বা আফস্পার মেয়াদ।
ডিসেম্বরের গোড়ায় জঙ্গি সন্দেহে সেনাবাহিনীর কমান্ডোদের গুলিতে ১৩ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর পর থেকে নাগাল্যান্ডে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জোরাল হচ্ছে। সেখানকার স্থানীয় কিছু মানবাধিকার সংগঠন এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। পথে নেমেছেন সাধারণ নাগরিকরা। এমনকী খোদ নাগাল্যান্ড এবং মণিপুর সরকার কেন্দ্রের কাছে আরজি জানিয়েছে, যাতে এই বিতর্কিত আইন প্রত্যাহার করা হয়। নাগাল্যান্ড বিধানসভায় আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবও পাশ হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হল না। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল, আজ থেকে আগামী ছ’মাসও নাগাল্যান্ড ‘উপদ্রুত এলাকা’ হিসাবে চিহ্নিত থাকবে। এবং সেখানে আফস্পা জারি থাকবে।
উল্লেখ্য, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহারের দাবি আজকের নয়, দীর্ঘ সময়ের। সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তার নামে সেনাবাহিনী তাঁদের উপর অকথ্য নির্যাতন করে বলে প্রায়শয়ই অভিযোগ ওঠে। নয়ের দশক থেকে অসম, নাগাল্যান্ড-সহ উত্তরপূর্ব ভারতের প্রায় সবকটি রাজ্য ‘উপদ্রুত এলাকা’ হিসাবে চিহ্নিত করে সেখানে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকার দিয়েছে কেন্দ্র।
প্রতি ছ’মাস অন্তর অন্তর এই আফস্পার মেয়াদ বৃদ্ধি হয়। নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে ১৩ জন নাগরিকের মৃত্যুর পর যেভাবে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি উঠছে, তাতে এ বছর এই মেয়াদ বৃদ্ধির আগে কেন্দ্র ভেবে দেখবে বলেই মনে করা হচ্ছিল। দিন কয়েক আগে আফস্পার প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে ৪৫ সদস্যের একটি কমিটিও গড়া হয়েছিল। কিন্তু কোনওরকম চিন্তাভাবনায় না গিয়ে আগের মতোই ফের বাড়িয়ে দেওয়া হল এই বিতর্কিত আইনের মেয়াদ। আফস্পার মেয়াদ বাড়ায় আরও একটা বড় প্রশ্ন উঠে গেল। সেনার বিশেষ অধিকার যদি থেকেই যায়, তাহলে গুলিকাণ্ডের তদন্ত হবে কী করে?