সম্প্রতি ১০০ দিনের কাজে কর্মীদের হাজিরার উপর নজরদারি চালাতে বিশেষ পোর্টাল চালু করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু তা কার্যকর করতে গিয়ে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ল প্রকল্পটি। সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং কিছু অজ্ঞতার কারণে এই পরিস্থিতি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় এখনও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটা শক্তিশালী হয়নি। এই অবস্থায় এই পোর্টাল চালাতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই পোর্টাল ছাড়াই কাজ হচ্ছে আগের মতো। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের তরফে এই পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়ার কোনও খবর এখনও জানানো হয়নি। কিন্তু বাস্তব কিছু সমস্যার কারণে ব্যবহার করা যাচ্ছে না ওই পোর্টাল।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে ‘ন্যাশনাল মোবাইল মনিটরিং সিস্টেম’ নামে ওই পোর্টাল চালু করার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রক। প্রতিদিন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আগে কর্মীদের ছবি, নাম সহ কিছু তথ্য আপলোড করতে হবে। এই হল নিয়ম। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে আদৌ কোনও কাজ না করেও কর্মী হিসেবে ভাতা পান অনেকে, এরকম অভিযোগগুলির সারবত্তা খতিয়ে দেখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। নির্দেশ আসার পর তা কার্যকর করতে বিভিন্ন ব্লকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় কর্মী ও সুপারভাইজারদের। কিন্তু বাস্তবে তা প্রয়োগ করতে গিয়েই সমস্যা টের পান আধিকারিকরা। এক বিডিও বলেন, প্রতিদিন কাজে যোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক বা সুপারভাইজার কর্মীদের তখনকার তোলা ছবি, নাম সহ তথ্য আডলোড করবেন পোর্টালে। তা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল হওয়ার কারণে সব তথ্য আপলোড করা যাচ্ছে না। ফলত এই পোর্টাল ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এপ্রসঙ্গে সুন্দরবন অঞ্চলের আরেক বিডিউ জানান, “আমরা এটি চালু করার জন্য অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ সেরে ফেলেছিলাম। কিন্তু মাঠে নেমে কাজ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে নেটওয়ার্কের সমস্যা প্রচুর। ফলে পোর্টাল ব্যবহার করা যাচ্ছে না।” তবে শুধু যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এমনটা হয়েছে, তা নয়। বিভিন্ন জেলার প্রান্তিক এলাকায় এই সমস্যা হচ্ছে। আধিকারিকদের মতে, ১০০ দিনের কাজের পরিধি গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অনেক এমন জায়গা রয়েছে, যেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছলেও তার স্পিড ভালো নয়। আবার কোথাও কোথাও এখনও এই ব্যবস্থা চালুই হয়নি। বাস্তব পরিস্থিতি মাথায় রেখে এই পোর্টাল চালু করা উচিত ছিল কেন্দ্রের। উপযুক্ত পরিকল্পনা ছাড়া পোর্টাল চালু করে দেওয়ায় শুরুতেই তা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেল বলে মনে করছেন অনেকে।