পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকা বা তার কম হলে প্রাপ্তবয়স্ক কন্যাদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা প্রদানের ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই স্বপ্নের প্রকল্প দূর করেছে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড়ের দুশ্চিন্তা। এমনকী এই করোনা কালেও থেমে থাকেনি সাহায্য প্রদান। রাজ্যে দীর্ঘ আটদফার ভোটপর্ব এবং করোনাকালেও বন্ধ ছিল না ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের কাজ।
নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৩ লক্ষ ১২ হাজার পাত্রীর কাছে পৌঁছেছে সরকারি সাহায্য। গতবছর আবেদন জমা পড়েছিল ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার। তাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা ও সরেজমিন পরিদর্শনের পর সামান্য কিছু আবেদনপত্র বাতিল হয়। তাছাড়া করনো মোকাবিলায় সরকার প্রথম থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কমেছে সংক্রমণের হার। বিয়ের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তাতে বিয়ের অনুষ্ঠান যেমন সীমিত সংখ্যক লোকসমাগমে হচ্ছে, তেমনই ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের সৌজন্যে পাত্রীর হাতে পৌঁছচ্ছে অর্থ সাহায্য।
সেই সঙ্গে এবছর ছিল বিধানসভার ভোট। আটদফায় ২৯২টি আসনে ভোট নেওয়া হয়। যেসব মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল, তাঁরা ভেবেছিলেন ভোটের কারণে সমস্যায় পড়তে হবে। কিন্তু বিয়ের পিঁড়িতে পা রাখতে চলা পাত্রীদের প্রতি বিশেষ সহানুভূতির দৃষ্টি ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের কাজ আটকায়নি। ভোটের সময়েও এই প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখার কথা আমরা কমিশনকে লিখেছিলাম। তাতে ছাড়পত্র মিলেছিল।
দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবর্ষে ইতিমধ্যেই ৮০ হাজারের মেয়ের কাছে পৌঁছেছে সরকারি সাহায্য। অর্থাৎ মাত্র ১৫ মাসে মোট প্রায় ৪ লক্ষ পাত্রীকে রূপশ্রীর অর্থ সাহায্য দিল মমতার সরকার। গত মে মাসে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের আবেদন খতিয়ে দেখে ৩৫,৮২২টি নথিভুক্ত হয়। তার মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ১৫,৪১০টি। বাতিল হয়েছে মাত্র ৪২৭টি আবেদন। বাকি আবেদনকারীর আর্থিক সাহায্য পৌঁছচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। পাশাপাশি জুনে নথিভুক্ত হয়েছে ৫০,৬৩৬টি আবেদন। মে মাসের কিছু আবেদনপত্র সংযুক্ত করে জুনে মঞ্জুর হয়েছে ৬৩,০১৯ জনের আবেদন।