‘ধর্মীয় বা যে কোনও ভাবাবেগের থেকে অনেক আগে আসে বাঁচার অধিকার’, উত্তর প্রদেশে কানওয়ার যাত্রায় অনুমতির সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনার করার নির্দেশ দিতে গিয়ে এমনটাই বলল সুপ্রিম কোর্ট। করোনাকালে প্রতীকী যাত্রার আয়োজনও না করার পরামর্শ দেওয়া হল উত্তর প্রদেশ সরকারকে।
করোনাকালে কুম্ভমেলার আয়োজন করে যেভাবে গোটা দেশের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বারের কানওয়ার যাত্রা স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ঠিক উল্টো পথেই হেঁটেছে উত্তর প্রদেশ সরকার, অনুমতি দেওয়া হয়েছে যাত্রার। তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাড়িয়ে দেশ, এই পরিস্থিতিতে কানওয়ার যাত্রার আয়োজন করা হলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে এবং যোগী সরকারের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করতেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
এ দিন সেই মামলার শুনানীতে শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, ‘এই প্রশ্নটি সকলের বিষয়েই এবং বাঁচার অধিকারের একদম গোড়ায়। ভারতীয় নাগরিকদের বাঁচার ও স্বাস্থ্যের অধিকার সবার প্রথমে আসে। মৌলিক অধিকারের সামনে কিছুই নয় এই ধর্মীয় বা অন্য কোনও ভাবাবেগ’। বিচারপতি নারিম্যান জানান, যদি উত্তর প্রদেশ সরকার যাত্রা স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্ত বিবেচনা না করে, তবে আদালতকেই জোর করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই বিষয়ে তিনি বলেন,’যাত্রা স্থগিত করার জন্য আমরা আরও একবার সুযোগ দিতে পারি। নাহলে আমাদেরই আদেশ দিতে হবে। আমরা সকলেই ভারতীয় এবং এই স্বতঃপ্রণোদিত মামলাটি সংবিদানের ২১ নম্বর ধারায় গৃহীত হয়েছে, যা সমস্ত ভারতীয়ের উপরই কার্যকর। হয় আপনারা পুনর্বিবেচনা করুন, নয়তো আমরা রায় দেব’। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
কেন্দ্রের তরফেও এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টকেই সমর্থন করা হয়। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, ‘দীর্ঘ বছরের প্রথা এটি এবং হাজারো মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগ এরসঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। রাজ্যের উচিত বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে সকলের কাছে গঙ্গাজল পৌঁছে দেওয়া। গঙ্গাজল বিতরণের সময়ও যেন সামাজিক দূরত্ববিধি ও অন্যান্য নিয়মাবলিগুলি অনুসরণ করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকে’।