গতবছর জানুয়ারিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী সমাবেশে গুলি চালিয়ে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল ১৭ বছরের এক কিশোর। সে সময় গ্রেফতারও করা হয়েছিল তাঁকে। কয়েক সপ্তাহ আগে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যায়, হরিয়ানায় এক সভায় বিদ্বেষমূলক ভাষণ দিচ্ছে সেই বন্দুকবাজ। এরপরই পুলিশ তাকে ফের গ্রেফতার করে। শুক্রবার হরিয়ানার আদালত তার জামিন নাকচ করে দিল। গুরগাঁওয়ের এক আদালতের বিচারক এদিন বলেন, ‘ওই ভিডিও দেখে আমাদের বিবেক পীড়িত হয়েছে। এই ধরণের মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।’ পরে বিচারক বলেন, ‘এই ব্যক্তি সুযোগ পেলে গণহত্যা ঘটাবে। ধর্মীয় ঘৃণার বশে নিরীহ মানুষকে হত্যা করবে।’
বিচারকের বক্তব্য, ‘যে অভিযুক্ত আদালতে দাঁড়িয়ে আছে, সে কোনও সরল, সাধাসিধা ছেলে নয়। তার অতীতের কার্যকলাপ থেকে বোঝা যায়, ঘৃণার বশে সে অনেক কাজ করতে পারে।’ বিচারকের মতে, নাগরিক স্বাধীনতা বা বাকস্বাধীনতার কথা বলে কোনও ভাবেই ওই কিশোরের কাজকর্মকে সমর্থন করা যায় না। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল বাকস্বাধীনতা। কিন্তু এই স্বাধীনতারও সীমাবদ্ধতা আছে। স্বাধীনতার মানে এই নয় যে, কেউ নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াবে।’ পুলিশ ও রাজ্য সরকারকেও তাদের কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিচারক এ-ও বলেন, ‘কোনও ধর্ম বা জাতের মানুষ যেন মনে না করেন যে, তাঁদের রক্ষা করার কেউ নেই। যারা ঘৃণা ছড়ায়, তাদের নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াতে দেওয়া উচিত নয়।’
উল্লেখ্য, লাভ জেহাদ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে আলোচনার জন্য সম্প্রতি হরিয়ানার পতৌদি অঞ্চলে মহাপঞ্চায়েত ডাকা হয়। সেখানে অভিযুক্ত কিশোরটি হুমকি দিয়ে বলে, ‘যদি আমি জামিয়া অবধি যেতে পারি, তাহলে পতৌদিও এমন কিছু দূরে নয়। সন্ত্রাসবাদী মানসিকতার লোকেরা যেন সাবধান থাকে।’ উপস্থিত জনতাকে সে বলে, লাভ জিহাদের মাধ্যমে মুসলমানরা যদি হিন্দু মেয়েদের ‘নিয়ে নেয়’, তাহলে আমাদেরও মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করা উচিত। তার ভাষণের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তাকে বলতে শোনা যায়, আমরা যদি আক্রমণ করি, মুসলিমরাও জয় শ্রীরাম বলবে।