তিনি ক্রিকেট ঈশ্বর। তিনি মাস্টার ব্লাস্টার। তাঁকে ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠান বললেও ভুল বলা হয় না। একটা সময় যেই নামে গোটা স্টেডিয়াম উদ্বেলিত হয়ে উঠত, তা শচীন তেন্ডুলকর। শুধু ভারত নয়, গোটা ক্রিকেটবিশ্বই তাঁকে অনন্য স্থানে বসিয়েছে। কারণ, একজন ব্যাটসম্যান হিসাবে যা যা রেকর্ড করা সম্ভব, তার সবই রয়েছে ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ শচীন তেন্ডুলকরের ঝুলিতে৷ শচীনের কিছু রেকর্ড আজও অক্ষত রয়েছে৷ তার মধ্যে অন্যতম হল ‘সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি’৷ শচীনই বিশ্বের একমাত্র ব্যাটসম্যান, যিনি নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারে ১০০টি শতরানের মালিক৷ এখনও পর্যন্ত তিনিই প্রথম আর তিনিই শেষ৷ এই মাইলস্টোন আর কোনও ব্যাটসম্যান স্পর্শ করতে পারেনি৷
কিন্তু আজ হঠাৎ এসব কথা উঠছে কেন? তার নিশ্চয়ই কিছু কারণ আছে। ক্যালেন্ডার বলছে, আজ থেকে ঠিক ৯ বছর আগে ২০১২ সালে এই তারিখেই, অর্থাৎ ১৬ মার্চ শচীন নিজের কেরিয়ারের বহু প্রতীক্ষিত এই শততম শতরানটি করেছিলেন৷ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচ ছিল সেটি৷ মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে এমএস ধোনির ভারত খেলতে নেমেছিল ঢাকার মীরপুরের শের-এ-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে৷
একবার ফিরে যাওয়া যাক সেই ম্যাচের ঘটনাবলীর দিকে। টস জিতে ভারতকে সেই ম্যাচে ব্যাট করতে পাঠান মুশফিকুর রহিম। গৌতম গম্ভীরকে সঙ্গে নিয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার৷ পাক্কা ২০৫ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে সেই ম্যাচে শচীনের ব্যাট থেকে এসেছিল ১৪৭ বলে ১১৪ রান৷ একডজন চার ও একটি ছয়ে সেই ম্যাচে নিজের মূল্যবান ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন মুম্বইকর৷ দুর্ভাগ্যবশত সেই ম্যাচ ভারতকে সেদিন ৫ উইকেটে হারতে হয়েছিল৷ কিন্তু বাংলাদেশের বাইশ গজে শচীন লিখেছিলেন ক্রিকেটের এক অনন্য ইতিহাস৷
নিজের কেরিয়ারে ৯৯তম সেঞ্চুরিটি করার পর থেকেই একটা মস্ত চাপের বলয়ের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলেন৷ প্রতি ম্যাচেই তাঁর ওপর ১০০ নম্বর সেঞ্চুরি করার প্রত্যাশা করতেন ফ্যানেরা৷ শচীন পরে মেনেও নেন যে, তাঁর কেরিয়ারে ১০০তম সেঞ্চুরিই ছিল সবচেয়ে কঠিন৷ তিনি বলেছিলেন, “আমি যখন দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে নেমে ৯৯ নম্বর সেঞ্চুরি করি, তখন কেউ ১০০ সেঞ্চুরি নিয়ে কথা বলেনি৷ আমার ভাল লাগত যদি নিজের ইচ্ছায় সেঞ্চুরি করতে পারতাম৷ সেঞ্চুরি করা সহজ নয়৷ এটা কখনই নিজের চাওয়ার ওপর হয় না৷ নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারের ৯৯তম সেঞ্চুরিটি করার পরেও এই অভিজ্ঞতাই হয়েছিল আমার৷ ১০০তম সেঞ্চুরিই সবচেয়ে কঠিন ছিল!”