উত্তরবঙ্গ সফরের পর আগামীকাল থেকে ফের জেলা সফর শুরু করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাঁকুড়ায় এবারের জেলা সফরে শুধুই প্রশাসনিক সভা নয়, রাজনৈতিক সভাও করবেন তিনি। কিছুদিন আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ বাঁকুড়া সফর করে গেছেন। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সভা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
আগামীকাল দুপুরেই বাঁকুড়া পৌছবেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় এসেই খাতড়ায় তিনি একটি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। পরের দিন মঙ্গলবার তিনি সাধারণ মানুষের হাতে সরকারি পরিষেবা তুলে দেবেন। এরপর বুধবারে তিনি যোগ দেবেন দলীয় সভায়। সব শেষে বৃহস্পতিবার তাঁর কলকাতায় ফিরে আসার কথা। রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভাবে আরও গতি আসবে জেলায়।
নবান্ন সূত্রে অবশ্য জানানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর এই জঙ্গলমহল সফর আগেভাগেই নির্ধারিত করা ছিল। ফলে পাল্টা সভা বা বৈঠকের প্রসঙ্গ ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে অমিত শাহ বাঁকুড়ায় এসে বৈঠক, আদিবাসী পরিবারে খাওয়া দাওয়া করে যাওয়ার পরে বিজেপি শিবির জঙ্গলমহলে তাদের রাজনৈতিক জয় বলে প্রচার শুরু করেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী তার এই সফরে প্রশাসনিক বৈঠক বাঁকুড়া শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে, আদিবাসী অধ্যুষিত খাতড়া এলাকায় করছেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনেই আদিবাসী এলাকা ও জঙ্গলমহল এলাকায় কী কী ধরণের কাজ হয়েছে, রাজ্য সরকার কি কি পরিকল্পনা করছে তা নিয়ে যাবতীয় আলোচনা হবে।
তৃণমূল নেতারা অবশ্য বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের জন্যেই কাজ করেন। তাই লোকদেখানো খাওয়া দাওয়া করে বিজেপি যে বার্তা দিতে চাইছে তা সঠিক নয়। এছাড়া, রাজনৈতিক ভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূল সুপ্রিমোর এই সফর। কারণ, লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া জেলার দুই আসনেই হেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। খোদ মন্ত্রী হেরে গেছেন ভোটের লড়াইয়ে। ফলে ভোটের হাওয়া যখন রাজ্য জুড়ে বইতে শুরু করেছে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তাছাড়া জঙ্গলমহলের আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কের দিকে চেয়ে আছে বিজেপি। তাই জঙ্গলমহলের এক জেলা থেকেই মমতা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিতে পারেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।