যোগী রাজ্যের হাথরসে উচ্চবর্ণের চার যুবকের হাতে গণধর্ষণের শিকার হওয়া দলিত মহিলার মৃত্যুর পর থেকেই তোলপাড় গোটা দেশ। তবে এর মধ্যেও উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে একের পর এক গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ন্যাশনাল ল স্কুল অফ ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে কর্ণাটক হাইকোর্ট জানাল, গণধর্ষণ খুনের থেকেও খারাপ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ডি) ধারা সংশোধন করে এই অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড ধার্য করা উচিত। স্বাধীনতার ৭৪ বছর পরও নারীদের নিরাপত্তা এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ করে বিচারপতি বি ভীরাপ্পা ও কে নটরাজনের ডিভিশন বেঞ্চ। এই কারণে লিঙ্গসাম্যের ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তোলা ও মহিলাদের সম্মান করার ওপর জোর দেন বিচারপতিরা। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ডি) ধারা গণধর্ষণের অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানার কথা লেখা আছে।
২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাইসুরু ও রামনগর জেলার রামু, শিবান্না, মাদ্দুরা, এলেইয়াহ, এরাইয়াহ, ডোড্ডা ও রাজাকে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল বেঙ্গালুরুর নবম অ্যাডিশনাল সিটি সিভিল সেশন জাজ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, হাইকোর্টে আবেদন করেছিল অপরাধীরা। আগের রায়কেই বহাল রেখেছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। সেই মামলায় আদালত বলেছে, ‘যখন একজন নারীকে নির্যাতন করা হয়, তখন শুধু তার শারীরিক ক্ষতের সৃষ্টি হয় এমন নয়, বরং তাঁর লজ্জার উপর মৃত্যুর মতো গভীর আঘাত করা হয়। নির্ভয়া ও এই মামলার ক্ষেত্রে একটাই তফাত্, নৃশংস অত্যাচারের পর নির্ভয়া মারা গিয়েছিল, আর এ ক্ষেত্রে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে নিজের দেশে ফিরে গিয়েছে ধর্ষিতা।’ আদালতের কথায়, ‘আইনের ছাত্রীর উপর গণধর্ষণের দ্বারা শুধু তাঁর উপরই অপরাধ করা হয়নি, গোটা নাগরিক সমাজকে আঘাত করা হয়েছে। সমাজকে ন্যায়বিচার দিতে এই অপরাধীদের শাস্তি হওয়া দরকার।’