হাতে আর বেশিদিন বাকি নেই। আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তবে একুশের ভোটকে পাখির চোখ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যখন ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত, তখন রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে ইতিউতি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েই চলেছে। এবার যেমন দলের যুব মোর্চার সব জেলা সভাপতি ও কমিটি বাতিল করা নিয়ে প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ-এর দ্বন্দ। ঘটনা হল বিজেপির যুব কংগ্রেস সভাপতি সৌমিত্র খাঁ-র অজান্তেই যুব মোর্চার রাজ্য ও জেলা কমিটি বাতিল করেছেন দিলীপ ঘোষ। যেখানে সংগঠনের এত বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি, কিন্তু সেই খবরই জানানো হয়নি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্রকে।
প্রসঙ্গত, পুজোর মধ্যে সংগঠনের বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন দিলীপ। বিজেপি যুব মোর্চার জেলা কমিটি বাতিল করলেন তিনি। তবে বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সত্ত্বেও সৌমিত্র কিন্তু দলের এই সিদ্ধান্ত আগে থেকে জানতেন না। ২০২১ বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে রাজ্য বিজেপি ও তার বিভিন্ন মোর্চার সংগঠনে রদবদল করা হয়। যুব মোর্চার দায়িত্ব দেওয়া হয় বিষ্ণুপুের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। কিন্তু, তাঁর এই পদ পাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। মিলছিল গোষ্ঠী কোন্দলের আভাস। দিলীপের ঘোষণার পিছনেও রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্বই প্রকটভাবে কার্যকর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি পদে ইনিংসের শুরুতেই জেলায় যুব মোর্চা সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশ করে প্রত্যাহার করতে হয় সৌমিত্রকে। সেসময় দিলীপ স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ওই তালিকা বৈধ নয়। সৌমিত্র অবশ্য দাবি করেছিলেন, দিলীপকে জানিয়েই এই তালিকা প্রকাশ করেছেন তিনি। ওদিকে সংগঠনের সদস্যদের দাবি ছিল, তালিকা তৈরিতে গড়মিল হয়েছিল। ১৫টি জেলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পুরনো নেতাদের। বিতর্কের মধ্যেই দিলীপ বলেছিলেন, ‘যুব মোর্চার রাজ্য কমিটিই তৈরি হল না। জেলা সভাপতিদের নাম চূড়ান্ত হল কী করে?’ পরে অবশ্য বিতর্ক জিইয়ে রেখেই রাজ্য যুব মোর্চার জেলা সভাপতি ও কমিটি সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেসময়ই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বিজেপি ও তার যুব সংগঠনের নেতৃত্বের মধ্যে টানাপোড়েন রয়েছে। এবারের ঘটনায় সেই গোষ্ঠীকোন্দলের কথা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।