বাংলার সাধারণ মানুষের জন্য কোভিড চিকিৎসার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তাই সদাসচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে প্রতিটি পুরসভা ও থানা এলাকায় সেফ হোমের সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন।
মূলত উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের সেফ হোমে রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ১০০-র বেশি সেফ হোম রয়েছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে এই সেফ হোমের সংখ্যা আরও বাড়াতে চাইছে রাজ্য সরকার।
সরকারি সূত্রে খবর, কোয়ারেন্টিন সেন্টারের জন্য রাজ্যের প্রতিটি পুরসভা এবং থানা এলাকায় উপযুক্ত জায়গা খুঁজতে বলা হয়েছে। বিশেষত হোটেল, স্টেডিয়াম, বিয়েবাড়িতে সেফ হোম তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ পুর এলাকাগুলিতে দরকারে একাধিক সেফ হোম করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তবে কোথায় কোথায় সেই সেফ হোম তৈরি হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য দফতর।
পুরসভা ও থানা সেফ হোমের জন্য যে তালিকা জমা দেবে সেটা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা খতিয়ে দেখবেন সংশ্লিষ্ট জেলার সিএমওএইচ। তারপর সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য দফতর।
বর্তমানে রাজারহাটের হজ হাউস, কলকাতার আনন্দপুর, তোপসিয়া, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, যাদবপুর কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম, খড়দহ পুরসভার বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামের ইত্যাদি বেশ কিছু জায়গায় সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও প্রয়োজন মিটছে না। তাই এবার রাজ্যের সব পুরসভা এবং থানাকে বলা হয়েছে, নিজেদের এলাকায় হোটেল, স্টেডিয়াম, বিয়েবাড়িতে এই সেফ হোমের জন্য চিহ্নিত করতে। বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১০০ থেকে ২০০ জন থাকতে পারেন এমন আশ্রয় চিহ্নিত করতে। সঙ্গে থাকতে হবে বাথরুম সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সেফ হোমগুলির সঙ্গে সরাসরি হাসপাতালের যোগাযোগ থাকবে। রোগীদের জন্য চিকিৎসক দল এবং অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হবে।
এমনিতে জুন মাসেই সেফ হোম গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। বেশ কিছু পুরসভা এলাকায় কমিউনিটি হল ব্যবহার করে তা গড়েও তোলা হয়েছে। কিন্তু এবার সেটাকেই সর্বত্র করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সরকারের অনেকের মতে, যাঁদের শরীরে করোনা পজিটিভ মিলছে তাঁদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গের রোগী। ফলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রাখা মানে গুরুতর রোগীদের জন্য সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া। হাসপাতালে যাতে সিরিয়াস রোগীদের রাখা যায় তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবেই সেফ হোমের পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য।