‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’। সেই কবেই বলেছেন মান্না দে। তবে তার পরেও যেটুকু ছিল, সেটুকুও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাজ্যে করোনা পর্বের শুরুতেই। কিন্তু সেই হারিয়ে যাওয়া ‘সোনালী সকালগুলো’ না ফিরলেও, আবার এক নতুন সকালের আলো দেখতে চলেছে বাঙালির এই আড্ডাস্থল। গত ২২ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল কলেজস্ট্রিট কফিহাউস। টানা ৩ মাস ১২ দিনে স্বপ্ন ভেঙেছে কফিহাউজের সাধারণ কর্মী থেকে আড্ডাধারী বাঙালির। অবশেষে সব বিপত্তি কাটিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ফের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী আড্ডা জোন। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এবার সকাল এগারোটা থেকে সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই কফিখানা। কলেজ স্ট্রিটের পাশাপাশি যাদবপুর কফিহাউসও খোলা থাকবে আগামীকাল থেকেই।
বুধবার কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে কফি হাউস স্যানিটাইজ করা হয়। কফিহাউস খুললেও এবার কিন্তু নিয়ম কানুনে বহু বদল আনা হয়েছে। কফি হাউসের ফার্স্ট ফ্লোর ও ব্যালকনি মিলিয়ে টেবিলের সংখ্যা ছিল পঁচাশিটা। একটি টেবিলে ন্যূনতম চার থেকে সর্বোচ্চ বারোটা চেয়ার রাখা হত। এই নিয়মে বদল না হচ্ছে। তবে কফি হাউসের পরিচালক সংস্থা কফি ওয়ার্কার কো অপারেটিভ লিমিটেডের কর্ণধার তপন পাহাড়ি জানাচ্ছেন, ‘আপাতত মাত্র পঁচিশটা টেবিল দিয়ে শুরু হচ্ছে পথ চলা। প্রতি টেবিলে চারটে করে চেয়ার দেওয়া হবে।’ একইসঙ্গে ব্যালকনি এখন খোলা হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে যাদবপুর কফিহাউসও খুলে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে। সেখানে একুশটা টেবিলের বদলে আপাতত দশটা টেবিল রাখা হবে।
শুধু তাই নয়। জানা গিয়েছে, আপাতত থার্মাল গানে তাপমাত্রা মেপে, হ্যান্ড স্যানিটাইজর ব্যবহার করে গ্রাহকদের ঢুকতে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে প্রতি সপ্তাহে স্যানিটাইজ করা হবে গোটা কফি হাউস। উল্লেখ্য, কলকাতা কফিহাউসে মোট কর্মী সংখ্যা ষাট। এর মধ্যে অনেকেই বিহার, উত্তরপ্রদেশে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বর্তমান কর্মীদের নিয়েই কফিহাউস খুলবে। মেনুতেও অবশ্য ব্যাপক কাটছাট করা হয়েছে। আপাতত কফি, ডিমটোস্ট, ডিমসেদ্ধ পাওয়া যাবে অর্ডারে। বাকি লোভনীয় সব মেনু আপাতত বন্ধ। তপন পাহাড়ি জানাচ্ছেন, ‘প্রথম সপ্তাহে বিক্রিবাট্টা কী রকম তা দেখার পর মেনু নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’