লাদাখ সীমান্তে চীন যেভাবে বারবার ভারতীয় ভূখণ্ডে অনধিকার প্রবেশ করছে তাতে ‘দ্বিপাক্ষিক চুক্তির চরম অবমাননা’ ঘটছে, স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। গত সোমবার গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনের সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা শহীদ হওয়ার ঘটনায় এ যাবৎ সবচেয়ে কড়া বার্তা রাখল মন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফে এ-ও জানানো হয়, মে মাসের গোড়া থেকে চীন নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিশাল সেনা মোতায়েন করতে শুরু করেছে।
গতকাল রাতেই রুদ্ধদ্বার ভিডিও বৈঠক ছিল ভারত এবং চীনের মধ্যে। এবং এই প্রথম চীনের তরফে একটুও সুর নরম ছিল না বলেই দাবি সেনার অন্দরের। তারই প্রতিফলন ঘটল বিদেশ মন্ত্রকের কথায়। মন্ত্রকের মুখপাত্র এবং নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত প্রায় সরাসরিই পরস্পরের দিকে আঙুল তুললেন আজ। কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি এখনই কী হবে বলা যাচ্ছে না, তবে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের আবহ বজায় থাকবেই।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের অভিযোগ, একতরফা ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সীমান্ত চুক্তি ভেঙেছে চীন। মে-র গোড়াতেই বিপুল সেনা মোতায়েন করেছে সেখানে। আবার দিল্লীর চীনা রাষ্ট্রদূতের পাল্টা বক্তব্য, ভারত যে পদক্ষেপ করেছে, তা ‘দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়’। ১৫ জুনের ঘটনার ‘দায়’-ও চীনের নয়।
বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘দুর্ভাগ্যবশত, শেষ কয়েক বছর ধরেই সীমান্তে সমস্যা তৈরি করছে চীন। ভারতের পক্ষ থেকে আজ অবধি যা যা পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে তা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এ-পারে অর্থাৎ আমাদের দিকে। ভারত কখনওই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করেনি। কিন্ত চীন একই ভূমিকা নেয়নি বলেই বারবার সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। বাধ্য হয়েই ভারতকে পাল্টা সেনা মোতায়েন করতে হয়। এর পরেও চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে বলেই সংঘাত ঘটে সেনাদের।’
মন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, ‘কূটনৈতিক ও সামরিক দু’ভাবেই আমরা চীনা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং পরিষ্কার করে দিয়েছি যে এ জাতীয় কোনও পরিবর্তন আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। পরে উভয় পক্ষই এলএসি’র সম্মান ও মেনে চলবে বলে সম্মত হয়। এছাড়াও দুই দেশ সম্মত হয়েছিল যে স্থিতাবস্থা রদবদলের জন্য কোনও পদক্ষেপ করবে না। বাস্তবে কিছুই ঘটছে না।’