ঘূর্ণিঝড় উম্পুনের জেরে প্রবল ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ জনজীবন। ঝড় কেটে যাওয়ার পর ৩ দিন ধরে চলতে থাকা নাগরিক দুর্গতির গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ সর্বত্র। সেই প্রসঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কার্যত বিরোধীদের নোংরা রাজনীতির দিকেই আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর মন্তব্য, ‘দু’দিনের মধ্যে সব কিছু ঠিক করা কি আদৌ সম্ভব? সেটা নিয়ে প্ররোচনা, উত্তেজনা ছড়াতেই হবে? আমরা সময় পেলাম কখন? আপনারা চাইলে আমার মুন্ডু কেটে নিতে পারেন। জানি, মানুষের খুব দুর্ভোগ হচ্ছে। সে জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি। এত বড় দুর্যোগ আগে কখনও হয়নি। তাই বলছি, দয়া করে একটু ধৈর্য ধরুন।’ একইসঙ্গে নাম না করে বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘এখন ক্ষুদ্র রাজনীতির সময় নয়। দয়া করে সাম্প্রদায়িকতায় সুড়সুড়ি দেবেন না।’
কী ভাবে এই বিপর্যয়ের মোকাবিলা করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘উম্পুন আসার আগে অন্তত ৩ লক্ষ লোককে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছিল। নইলে জীবনহানি আরও বাড়তে পারত। এছাড়াও, গত কয়েক দিন ধরে সবাই দিনরাত জেগে কাজ করছি। যাঁরা রাস্তা পরিষ্কার বা অন্য কাজে যুক্ত, তাঁরাও ২৪ ঘণ্টা কাজ করে চলেছেন। আমাদের এক হাজার টিম কাজ করছে। তাঁরাও তো মানুষ।’ এই সূত্রেই তাঁর বক্তব্য, ‘পাড়ার ছেলেরা পর্যন্ত নেমে পড়েছে। পুলিশ লকডাউন সামলাবে, না সাইক্লোন সামলাবে? এই চাপও সকলের মনে রাখতে হবে। জেলায় মানুষ আরও কষ্টের মধ্যে রয়েছেন।’
বুধবার ঝড়ের পর থেকে আলোহীন যে বিরাট সংখ্যক মানুষ শনিবার রাত পর্যন্তও কোনও সুরাহা পাননি, তার দায়ও মুখ্যমন্ত্রী অনেকটা চাপিয়ে দেন সিইএসসি’র উপর। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘ঝড়ের পর থেকে আমি নিজে কথাবার্তা চালাচ্ছি। সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে নিজে কথা বলেছি। কাজের লোক কম হয়ে গিয়েছে। করোনার কারণে অনেকে ছুটিতে। আর ২০-৩০ শতাংশ লোক নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে বলেছি, কোনও কথা শুনতে চাই না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরাতে হবে।’