কেন্দ্রের বঞ্চনা। বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি। এই দুই অভিযোগকে সামনে রেখে বিধানসভায় এদিন অল আউট অ্যাটাকে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা জবাব এল বিজেপি শিবির থেকেও।
রাজ্যপালের বাজেট ভাষণের ওপর জবাবি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রশ্ন ছোঁড়েন বিরোধীরা। উত্তর দেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে সরগরম হয়ে ওঠে অধিবেশন। একসঙ্গে কেন্দ্র ও বিজেপিকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লী ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার দুদিন পর অমিত শাহের ব্যাখ্যা ছিল, কু-কথায় ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে। এই ইস্যুতে বিধানসভায় নাম না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘আপনি গুলি চালানোর পর যদি বলেন তাহলে আর কী!’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সবচেয়ে সরব ছিলেন নাগরিকত্ব ইস্যুতে। মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে উদেশ্যে করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিগ্গাবাবু আপনার পার্টিকে বলুন বাংলা উত্তরপ্রদেশ নয়। এখানে সিএএ করতে দেব না। এনপিআর যাতে না হয় তার জন্য অন্য রাজ্যে চিঠি দেব। সব রাজনৈতিক দলকে চিঠি দেব।’ প্রসঙ্গত, সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অসমে এনআরসি-র ডেটা উধাও, এমন অভিযোগ ঘিরে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয়। শুক্রবার তা নিয়েও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এনআরসি’র ডেটা উড়ে গেছে। বিষয়টা কালিদাসের মতো ডাল কাটা হয়ে যাচ্ছে না? মনোজ টিগ্গাবাবু আপনাদের দল জায়গায় জায়গায় লোক পাঠাচ্ছে ডেটা তুলতে। মনে রাখবেন, ফেট্টি বেঁধে কেউ বাংলা দখল করতে পারবে না।’
পাশাপাশি, এদিন ধর্মান্তরকরণ ইস্যুতেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা সফরে গিয়ে ধারাবাহিকভাবে ধর্মান্তরকরণ ইস্যুতে সুর চড়াচ্ছেন মমতা। বিধানসভাতেও তার ব্যতিক্রম হল না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সব খবর রাখি। আদিবাসীদের ধর্ম বদলানোর চেষ্টা করবেন না।’ বিজেপিকে আক্রমণ করতে এদিন একচুলও ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় এসে এরাজ্যের চারটি চাবাগান অধিগ্রহণের আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গও মুখ্যমন্ত্রী টেনে আনেন এদিন। বলেন, ‘মনোজ টিগ্গাবাবু আপনার দলের নির্মলা সীতারামন মিটিং করে চারটে চা-বাগান নেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছুই নেননি।’
এদিন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এলআইসি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তোপ দাগেন, দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা এলআইসি। তার অংশীদারিত্বের একাংশ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তাতে মাথায় হাত গ্রাহদের। আন্দোলন করছেন এলআইসি-র কর্মীরা। শুক্রবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে এলআইসি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন।’