গত বছরের ২ জুন উড়িষ্যার বালেশ্বরে শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল, বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এবং একটি মালগাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যার মধ্যে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই ঘটনায় ২৯৩ জনের মৃত্যু এবং ১২০০ যাত্রী জখম হন। এর ঠিক এক বছরের মাথায় সোমবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। যা নিয়ে সর্বত্র উদ্বেগ। কী বলছেন, দুর্ঘটনাস্থল রাঙাপানির বাসিন্দারা? প্রথমে বিকট শব্দ। তার পরে ট্রেন লাইনে নজর পড়তেই চমকে উঠেছিলেন ওঁরা। সোমবার ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানির কাছে, জালাস গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট নির্মল জোতের বাসিন্দাদের অনেকেরই দিন শুরু হয় আঁতকে ওঠা দিয়ে। সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ কানফাটানো আওয়াজের পরে, তাঁরা দেখেন, মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপরে উঠে গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের একটি কামরা! ধাক্কায় প্রায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে আর একটি। যাত্রীদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল গ্রাম জুড়ে।
প্রথমে স্থানীয়েরাই উদ্ধার কাজ শুরু করেন। গ্রামবাসীরা বাড়ি থেকে জল, চাদর নিয়ে আসেন। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি কামরার ভিতর থেকে যাত্রীদের বার করে আনা হয়। রেলে খবর যাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায় এনডিআরএফ কর্মীদের। ট্রেন দুর্ঘটনার খবর চাউর হতেই আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও আসতে শুরু করেন। হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো শুরু হয়। গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আজিবুল, মহম্মদ রাহুলেরা বলেন, ‘মানুষের আর্তনাদ শুনে, দেহাংশ রেললাইনে পড়ে থাকতে দেখে কেঁদে ফেলেছিলাম। চুপ করে বসে থাকতে পারিনি।’ এলাকার মসজিদের ইমাম মহম্মদ বসিরউদ্দিন বলেন, ‘কোনও বাড়িতে রান্না হয়নি। সোমবার কুরবানি ইদ ছিল। কোনও বাড়িতে কুরবানি হয়নি। যুবক, মহিলা সকলে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন। জখম যাত্রীদের কোলে নিয়ে মেডিক্যালে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন গ্রামবাসীরা। পরে উদ্ধারকারী দল পৌঁছয়।’