গতকাল, সোমবারই ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সফরের দ্বিতীয় দিনেই সকলের মন জিতে নিলেন তিনি। বলা ভাল, মমতা এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন।
নীল পাড় সাদা শাড়ি, পায়ে চটি আর সাদা শাল। সাধারণত এটাই মমতার পরিচিত ছবি। কিন্তু এই শীতের মরুশুমে পাহাড়ে তাঁকে দেখা গেল অন্য পোশাকে। শাড়ির ওপর সাদা জ্যাকেটে একেবারে ভিন্ন রূপে জনসংযোগ সারলেন মমতা।তিনি দার্জিলিংয়ে এসেছেন, খবর পেয়েই মঙ্গলবার সাতসকালে হাজির হয়েছিলেন একদল বাসিন্দা। মমতাও মিশে গেলেন পাহাড়ের আমজনতার সঙ্গে। তাঁকে কাছে পেয়ে আপ্লুত পাহাড়বাসীও।
https://www.facebook.com/ekhonkhobor18/videos/673235983210144/
প্রসঙ্গত, জনা কয়েক নিরাপত্তারক্ষী নিয়েই মঙ্গলবার সাতসকালে রিচমন্ড হিল থেকে বেরিয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। সকালের ঠান্ডা কনকনে হাওয়া উপেক্ষা করে চেনা ছন্দেই হেঁটে সিংমারি পৌঁছন তিনি। সেখান থেকে চিড়িয়াখানার সামনে দিয়ে চলে আসেন চৌরাস্তায়। রাস্তায় পথচলতি মানুষজন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে কথাও বলেন মমতা।
দার্জিলিং ম্যালের কাছে একটি পোলিও কর্মসূচী চলছিল। সেখানে স্থানীয় একটি শিশুর দিকে নজর পড়ে তাঁর। তিনি শিশুটির অভিভাবককে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, পোলিও খাওয়ানো হয়েছে কি না। অভিভাবক জানান, তাঁরা সে সুযোগ পাননি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ডেকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্তার কাছ থেকে পোলিওর প্রতিষেধক নিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দেন। অভিভাবক থেকে উপস্থিত জনতা তখন বিহ্বল।
এরপর সেখানে দাঁড়িয়ে আরও কয়েকটি শিশুকেও নিজে হাতে পোলিওর প্রতিষেধক খাওয়ান মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকটি বাচ্চাকে নতুন সোয়েটারও কিনে দেন তিনি। ‘কাছের মানুষ’ মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে উত্সাহ ধরা পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে।
পথে যেতে যেতে দু’পাশে সার বেঁধে থাকা দোকানে কোনও একটায় ঢুকে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা কেমন আছেন, কোনও আতঙ্ক কাজ করছে কি না। কোনও সমস্যা হলে জেলা প্রশাসনকে জানানোর কথা বলে যান মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর নেহরু রোড হয়ে রবার্টসন রোড এলাকা, অ্যলেক্সভিলা রোড হয়ে ভানুভবন। সেখান থেকে রিচমন্ড হিলে ফিরে যান মমতা। ঘন্টা দু’য়েক নির্ভেজাল সময় কাটিয়ে পাহাড়বাসীর মন জয় করে নেন রাজ্যের সর্বময় কর্ত্রী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দার্জিলিঙেই থাকবেন মমতা। ২১ তারিখ, মঙ্গলবার বিভিন্ন জনজাতিদের বোর্ড, জিটিএ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ২২ জানুয়ারি তিনি নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় আয়োজিত এক পদযাত্রায় অংশ নেবেন।
তার পরদিন, ২৩ জানুয়ারি দার্জিলিং ম্যালে রাজ্য সরকার আয়োজিত নেতাজি জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। ২৪ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি ফিরবেন। রাতে থাকবেন উত্তরকন্যার গেস্ট হাউজ কন্যাশ্রীতে। শুক্রবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা হয়ে বিমানে কলকাতা ফিরবেন।