বেশ কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে নানা কুরুচিকর মন্তব্য ও কটুক্তি করে আসছেন ‘কমরেড’রা। তিনি যে এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল সোমবার রানি রাসমণি রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অবস্থান মঞ্চ থেকেই সে কথা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামেদের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘শুধু আমার মৃত্যু না চেয়ে, সিপিএম দিল্লীতে আন্দোলন করে দেখাক।’
শুধু তাই নয়। সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘ওরা এখানে রাস্তায় যেখানে খুশি বসে পড়ছে। অথচ দিল্লিতে ওদের এতবড় পার্টি অফিস আছে, ক’টা মিছিল করেছে ওখানে? দিল্লীতে যদি আমার পার্টি অফিস থাকত, তাহলে ৫০০ মিছিল করতাম। সিপিএম বিজেপির তাবিজ হয়েই থাকবে। সিপিএম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুধু আমাকে গাল দিয়ে যাচ্ছে। খালি মমতা আর মমতা। শনিবার এই অবস্থান মঞ্চের সামনে যে দুঃস্বপ্নের ঘটনা ঘটেছে, তাকে আমি নিন্দা করছি না, শুধু চাইছি, যারা সেদিনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।’
গতকাল তৃণমূল নেত্রী আবারও এই দাবি তোলেন যে, এনআরসি, সিএএ, এনপিআর প্রত্যাহার করতে হবে। আসুন সকলে মিলে শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাই। তিনি বলেন, ‘আমি আবার বলছি, নিজেদের অস্তিত্ব রাখতে রাস্তায় নামুন, বাংলায় আমাদের অস্তিত্ব আছে, তাই আমরা নেমেছি। যারা মোদীর বিরোধিতা করেন, তারা মুখে বলেও কাজে নামেন না। অনেকে রিলে অনশন করে নাটক করে। কেউ কেউ সস্তায় প্রচার পাওয়ার জন্য রাস্তায় নেমে ভাঙচুর করছে, বাসে আগুন দিচ্ছে, ঢিল মারছে— এটা কোনও সভ্য দেশে আন্দোলন হতে পারে না।’
তাঁর মতে, ‘আন্দোলনে আবেগ থাকবে, আন্তরিকতা থাকবে। হিংসার রাজনীতি আমি বিশ্বাস করি না। বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস হিংসার রাজনীতি করছে। লাগাতার আন্দোলন এরা করতে পারে না। কখনও দেখা গেল ২ ঘণ্টার জন্য ঝান্ডা নিয়ে এল, তিন ঘণ্টার পর পালিয়ে গেল। অল্প শক্তি নিয়ে অনেকেই আন্দোলন করছে, তাদের আমি স্যালুট জানাই। হিংসাকে উৎসাহ দিচ্ছে বিজেপি। আমরা হিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করি না। উৎসাহ দিই না।’
এরপরই বরাবরের মতোই বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘এই ক’বছরে কত বেকারের চাকরি দিয়েছে? আমরা বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারের সংখ্যা কমিয়েছি। বিজেপি শুধু হিন্দুস্থান-পাকিস্তান করছে। ভাগাভাগির রাজনীতি করে ভাবছে, সব হয়ে গেল। সিপিএম, কংগ্রেস কিছু করতে পারবে না। বিজেপি জাহান্নামে যাও। তৃণমূল কারও নির্দেশের পরোয়া করে না। আমাদের দল অত্যন্ত মানবিক। স্ট্রং পলিটিক্যাল পার্টি। কেউ আঁচড় লাগাতে পারবে না।’