আজ ভোরবেলা প্রয়াত হলেন রাজ্যের বাম আমলের প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী। বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। জানা গেছে, ভোর চারটে নাগাদ চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বাম আমলের প্রাক্তন এই মন্ত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই শোকাছন্ন হয়ে পড়েছেন রাজ্যের বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। দীর্ঘদিনের এই লড়াকু বাম নেতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকজ্ঞাপন করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। তবে গলার একটি সমস্যার জন্য কিছুদিন আগে চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তখন একটা অস্ত্রোপচারও হয়। তারপর সুস্থ হয়ে উঠছিলেন বলে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। শনিবার ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভরতি করা হয়। সেখানেই রবিবার ভোর চারটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁর মরদেহ কলকাতায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
৩৪ বছরের বাম আমলে, রাজ্য সরকারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুখ ছিলেন ক্ষিতি গোস্বামী। দীর্ঘদিন রাজ্যের একাধিক দফতরের দায়িত্ব যেমন সামলেছেন, তেমনি ছিলেন আরএসপির রাজ্য সম্পাদকও। বামফ্রন্টের প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই রাজ্যের বাম আন্দোলনের প্রসারে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। জোটে থেকে যেমন সরকারের সমালোচনা করেছেন, তেমনি বামফ্রন্টকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্যও চেষ্টা করেছেন সর্বদা। রাজ্য তথা দেশের বাম আন্দোলনে আরএসপির হয়ে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর ফলে বহরমপুরের ত্রিদিব চৌধুরির পর একসঙ্গে রাজ্য সম্পাদকের হওয়ার পাশাপাশি দেশেরও দায়িত্ব পান বালুরঘাটের বাসিন্দা ক্ষিতিবাবু।
সম্প্রতি রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামদের জোট গড়া নিয়ে যে বৈঠক হয় তাতেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। তারপরই গলার সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বাধ্য হয়ে চেন্নাইয়ের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অস্ত্রোপচারও করিয়ে নিয়ে আসেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। কিন্তু, গতকাল ফের শরীর খারাপ হওয়ায় তাঁকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছিল। রাতে স্ত্রীকে বলেন বুকে ব্যথা করছে। ডাক্তাররা এসে তাঁকে পরীক্ষাও করেন। কিন্তু, সবরকম চেষ্টা বৃথা করে ভোর চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।