ঐতিহাসিক টেস্টের ইতি ঘটবে দুদিনেই। এমন কথা ঘুরছিল ইডেন টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলায়। রবিবার ছুটির দিনে যারা ইডেনে ভিড় করবে ভেবেছিল তাদের মাথায় হাত পরে গেছিল। কিন্তু শেষমেশ ম্যাচটি গড়াল তৃতীয় দিনের দিকে। আর নেপথ্যে অবশ্যই মুশফিকুর রহিম। দলের ভাঙনের মুখে একা লড়ে গেলেন। দেখিয়ে দিলেন ভিন্ন চরিত্রের গোলাপি বল যতই বোলারদের সাহায্য করুক না কেন, ক্রিকেটে দক্ষতাই শেষ কথা। স্কিল থাকলে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে ঠিকই বেরিয়ে আসা যায়। মুশফিকুর তো সেই কাজটাই করলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। ভারতীয় বোলাররা বিশেষ করে ইশান্ত শর্মা ইডেনের পিচে শনিবার যখন আগুন ঝরাচ্ছেন, মুশফিকুর দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গেলেন। বাংলাদেশের অন্যতম সিনিয়র ব্যাটসম্যান দিনের শেষে ৫৯ রানে ক্রিজে রয়েছেন। তিনি ক্রিজে থাকা মানেই রবিবার ভারতের জয় পিছিয়ে যাবে।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম দিকে রীতিমতো ধ্বস নেমেছিল। ইশান্ত-উমেশের দাপটে ১৩ রানের মধ্যে চার উইকেট পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। সেই সময়ই রুখে দাঁড়ান মুশফিকুর। তবে তৃতীয় দিনে তাঁকে একাই লড়াই চালাতে হবে। তাঁকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই এই মুহূর্তে। শনিবার খেলা শেষ হওয়ার আগে তাইজুল ইসলাম স্লিপে দাঁড়ানো অজিঙ্কে রাহানেকে যেন ক্যাচ প্র্যাকটিস প্যাভিলিয়নে ফিরলেন। দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৫২। প্রথম ইনিংসের রান দ্বিতীয় ইনিংসে ছাপিয়ে গেল বাংলাদেশ। তা হলে কি মুশফিকরা প্রথম ইনিংসের থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ভাল খেলে? অনেক আগে তো ভারতের ক্ষেত্রেও এমনটাই বলা হত।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই শাদমান ইসলামকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ইশান্ত শর্মা। শনিবার বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনিই হয়ে উঠলেন বিধ্বংসী। প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন তিনি। এলবিডব্লিউ করেন বাঁ-হাতি ওপেনার শাদমানকে। পরের ওভারেই ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হককে। অফ স্টাম্পের বাইরে সুইং ভাঙার মুখে মোমিনুলের খোঁচা সহজেই ধরে ফেলেন উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। এর পরই ইশান্তের বাউন্সার মাথায় লাগে মহম্মদ মিঠুনের। দৌড়ে আসেন ফিজিও।
মিঠুন অবশ্য পরে ফের ব্যাট করেন। কিন্তু চা বিরতির পরই ফিরলেন। উমেশ যাদবের বলে শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দেন মিঠুন (৬)। ইশান্তের তৃতীয় শিকার হলেন ওপেনার ইমরুল কায়েস (৫)। মুশিফকুর ও মাহমুদুল্লাহ বাংলাদেশের ইনিংস গোছানোর কাজ করেন। ৩৯ রানে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ায় অবসৃত হন মাহমুদুল্লাহ। তার পরে ভারতের বোলার বনাম মুশফিকুর। এখন এটাই দেখার তৃতীয় দিনে ভারতের বোলিং ব্রিগেডের সামনে লড়াই চালান বাংলাদেশের এই তারকা খেলোয়াড়।