ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলার শ্রমিকদের সুরক্ষায় এবার পৃথক বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এরাজ্য থেকে যে সব মানুষ কাজের সন্ধানে অন্য রাজ্যে যান তাদের বিস্তারিত তথ্যভাণ্ডার মজুত রাখা এবং প্রয়োজনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এই বোর্ড তৈরি করা হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে কোনও শ্রমিক বিপদে পড়ে ওই বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। শ্রমিকদের অনলাইনে নাম নথিভুক্তিকরণের ব্যবস্থা থাকবে। সম্প্রতি কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলায় রাজ্যের ৫ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে এই বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
২০১১ সালের জনগণনার হিসাব অনুযায়ী এরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ২৪ লক্ষ। শ্রম দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘এখন পরিযায়ী শ্রমিকদের ধরন পাল্টে গেছে। আগে কোনও এক দালালের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দলবেঁধে শ্রমিকরা ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতেন। এখন গ্রামের একজন যাওয়ার পর তাঁকে দেখে আরও দু-দশ জন রওনা হচ্ছেন। ফলে কে, কীভাবে, কোথায় যাচ্ছেন তার কোনও হদিশ থাকছে না।’
পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করার জন্য ঠিকা শ্রম আইনে ঠিকাদারদের লাইসেন্স দেওয়ার বিধিআছে। কোনও ঠিকদারকে ভিনরাজ্যে ঠিকা শ্রমিক নিয়ে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের শ্রম দপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। শ্রমিকদের বাড়ি যে রাজ্যে সেখানকার শ্রম দপ্তরে তথ্য যাচাইয়ের জন্য তালিকা পৌঁছতো ভিনরাজ্য থেকে। এরাজ্যের শ্রমদপ্তরের হাতে নাম জমা পড়ত এই নিয়মের কারণেই। কিন্তু ঠিকা শ্রম আইনে ঠিকাদারের লাইসেন্স নেওয়ার এই বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য সাধারণভাবে সরকারি প্রকল্পের কাজে। ফলে বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত লক্ষ-লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের কোনও তথ্যই রাজ্যের শ্রম দপ্তরে আসছে না।