প্রথম মোদী সরকারের আমল বারবারই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে এ রাজ্য। সেই ধারা বজায় রয়েছে মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসেও। তাদের পেশ করা প্রথম সাধারণ বাজেটে বাংলার জন্য কোনও বিশেষ প্রকল্পের ঘোষণা তো হয়ইনি, বরং রাজ্যের বেশ কিছু চলতি প্রকল্পে বরাদ্দ শুন্য করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী রেল বাজেটেও বাংলায় ‘বঞ্চনা এক্সপ্রেস’ ছুটিয়েছে মোদী সরকার। আর এবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও ব্রাত্য বাংলা ভাষা। এখন থেকে শুধু ইংরেজি, হিন্দি ও গুজরাতি ভাষায় তৈরি হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রশ্নপত্র। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে তৈরি হওয়া ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি(এনটিএ)-র নয়া নির্দেশিকায় এই ত্রিভাষায় প্রশ্নপত্র তৈরি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্দেশিকা ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, সুদীর্ঘকাল ধরেই সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় প্রশ্নপত্র তৈরি হত। পরীক্ষার্থীরা এই দুই ভাষায় উত্তর দিতে পারতেন। এবং এই পরীক্ষায় যে ১১ লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রতি বছর বসেন, তাঁদের মধ্যে বাংলাভাষী ও মারাঠিভাষী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অন্য ভাষার পরীক্ষার্থীদের থেকে বেশি থাকে। কিন্তু আঞ্চলিক ভাষায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিতে যদি ইংরেজি ও হিন্দির পাশাপাশি অন্য ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়, তাহলে বেছে বেছে কেন শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড়ের গুজরাতি ভাষা অন্তর্ভুক্ত হল? কেন বাংলা, মারাঠি, তামিল, তেলুগু, ওড়িয়া-সহ অন্য আঞ্চলিক ভাষায় প্রশ্নপত্র তৈরি হবে না সেই প্রশ্নও উঠেছে। আঞ্চলিক ভাষাগুলির মধ্যে শুধু গুজরাতিকে প্রাধান্য দেওয়ায় সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশেন একযোগে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধীরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুজরাতিদের আধিপত্য তৈরি করতে মোদী-শাহ এই পরিকল্পনা করেছেন কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছে তারা।