কাশ্মীরে মুর্শিদাবাদের ৫ শ্রমিকের মৃত্যুতে তাঁরাও লজ্জিত। মেহমানদের রক্ষা করতে পারেননি তাঁরা। এমনই অভিমত বহরমপুরে আসা কাশ্মীরি শাল ব্যবসায়ীদের। তাঁদের সাফ কথা, “বাংলা আমাদের দ্বিতীয় ঘর। এখানে আমরা নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারি। ইচ্ছেমতো খেতে পারি। কোনও বাধা–নিষেধ নেই”। বহরমপুরে ষাট ছুঁইছুঁই শওকত শাহের দোকান। ৩২ বছর ধরে আসছেন।
কাশ্মীরে বাংলার ৫ জনের মৃত্যুর খবরে খুবই দুঃখ পেয়েছেন শওকত। কুণ্ঠিত গলায় তিনি বললেন, “কাশ্মীরে যারাই যান তারা আমাদের মেহমান। কিন্তু এই মেহমানদের রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের এটা লজ্জা। আসলে কী জানেন, যারা মারা গেলেন তারাও গরিব, কাশ্মীরে যে সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছেন তারাও গরিব”।
মোদী জমানায় ৩৭০ ধারা লোপ নিয়ে শওকত, আমিনরা বলেন, “৩৭০ ধারা লোপ করে কোনও লাভ হয়নি আমাদের। উল্টে ক্ষতি হয়েছে। এখনও স্কুল–কলেজ বন্ধ। ছেলেমেয়েরা পড়তে পারছে না। পর্যটক হল আমাদের সব। সেই পর্যটক আসতে পারছেন। কাশ্মীরের ব্যবসা শেষ হয়ে গেল”।
বহরমপুর শহরের জলট্যাঙ্ক মোড়ে দোকান মহম্মদ আমিনের। সঙ্গে দাদা লতিফ আহমেদ। ৫৫ বছর ধরে বংশপরম্পরায় তারা বাংলায় আসছেন। আমিন জানান, “আমরা বাংলায় এত নিশ্চিন্তে থাকি যে বলার নয়। সবাই খুব ভাল। কোনও সমস্যা নেই। পুলিশের ঝুটঝামেলা নেই। রাজনৈতিক দলের কেউ চাঁদার দাবিও করে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আমরা এখানে সব সুবিধা পাই৷ বাংলাই আমাদের দ্বিতীয় ঘর। সবচেয়ে বড় কথা, আমি মসজিদে নমাজ পড়তে গেলে কেউ কিছু বলেন না। আমি আমার মতো খাবার খাই। কেউ মাথাও ঘামায় না। সকলে এখানে দাদা, ভাই, বন্ধুর মতো। বিপদে পড়লে সাহায্য করেন। ফলে এখানে আসব না তো কোথায় আসব!”