স্বামী স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ প্রায়ই হয়ে থাকে। পণ না পেয়ে তালাকও নতুন নয়। তবে এক দম্পতির বিচ্ছেদের কারণ শুনলে আপনি চমকে উঠবেন। এই কারণেও যে বিচ্ছেদ হতে পারে, তা বিশ্বাস না হওয়াই স্বাভাবিক। শুধুমাত্র স্ত্রীর গজদাঁত আছে বলেই তাঁকে তিন তালাক দিল স্বামী। হায়দ্রাবাদ নিবাসী ওই মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। যার জেরে বৃহস্পতিবারই অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ, পণ আইন এবং তিন তালাক আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
অভিযোগকারিণী রুখসানা বেগমের বয়ান অনুযায়ী, “ আমাকে মুস্তাফা জানায়, আমার দাঁত বাঁকা। তাই পছন্দ করে না। আমার সঙ্গে ঘর করবে না। তারপর শ্বশুরবাড়িতে আমাকে ১৫ দিন আটকে রাখা হয়। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমাকে বাপেরবাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানানোর পর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বোঝাপড়ার কথা বলে। আমাকে শ্বশুরবাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়। কিন্তু ১ অক্টোবর আমার বাপেরবাড়ি এসে মুস্তাফা বলে যায় আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে না। আমার মা–বাবাকেও অপমান করে। এরপর ১২ অক্টোবর আমাকে ফোনেই তিন তালাক দেয় মুস্তাফা।’
অভিযোগকারিণী পুলিশকে জানিয়েছেন ২০১৯ সালের ২৭ জুন হায়দরাবাদের বাসিন্দা মুস্তাফার সঙ্গে তাঁর নিকা হয়। নিকার পর থেকেই অত্যাচারিতা রুখসানা বেগমের ওপর পণের কারণে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। আর তাই স্বামী মুস্তাফা ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছেন অত্যাচারিতা। রুখসানা বেগমের আরও অভিযোগ, তার স্বামী মুস্তাফা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে রীতিমতো হেনস্থা করত তাঁকে।
রুখসানার দাবি, তাঁদের বিয়ের সময় মুস্তাফা ও তার পরিবার অনেক কিছুই দাবি করেছিল এবং তাঁর পরিবার তাদের দাবি পূরণও করেছিল। কিন্তপ বিয়ের পরে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ি তাঁকে হেনস্থা করতে শুরু করে, তাঁকে বাড়ি থেকে আরও সোনা আর টাকা আনতে চাপ দিতে থাকে। এমনকি তাঁর ভাইয়ের কাছ থেকে একটি বাইকও নিয়েছিল মুস্তাফা বলেন অভিযোগে জানিয়েছেন রুখসানা বেগম।
তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মুস্তাফার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারায় মামলা রুজু করে। যদিও থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে এলাকায় আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না মুস্তাফার। একাধিকবার মুস্তাফাকে ফোন করেও পাননি রুকসানা। আপাতত সুবিচারের আশাতেই প্রহর গুনছেন নির্যাতিতা এবং তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন।