কাশ্মীরের পর এবার মণিপুর নিয়েও অস্বস্তি বাড়ল কেন্দ্রীয় সরকারের। স্বাধীনতার পর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল মণিপুরকে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েও পারেননি৷ পরে মণিপুর ১৯৪৯ সালে চুক্তি মারফৎ শর্তস্বাপেক্ষে ভারতে যোগ দিয়েছিল৷ সেজন্য ওই রাজ্যে ৩৭১ ধারা এখনো জারি আছে৷ মনিপুরের ভিন্নমতাবলম্বী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা গতকাল বলেছেন, তাঁরা একতরফাভাবে ভারত থেকে স্বাধীনতা ঘোষণার পাশাপাশি ব্রিটেনে একটি প্রবাসী সরকার গঠন করেছেন।
১৯৪৯ সালে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার হয়েছিল মণিপুর। কিন্তু কয়েক দশক ধরেই রাজ্যটিতে বিদ্রোহ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ লেগেই আছে। স্ব-ঘোষিত মনিপুর রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারেংবাম সমারজিত বলেন, প্রবাসী সরকার এখন রাষ্ট্রসংঘের সমর্থন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাবে।লন্ডনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা এখন আইনগত বৈধ প্রবাসী সরকার পরিচালনা করবো। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও মণিপুর রাজ্য সরকার এখনো পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি৷
এর আগে ২০১২ সালে মনিপুরে প্রথম প্রকাশ করা স্বাধীনতার ঘোষণা জোরে জোরে পড়ে শোনান তিনি। রাজ্যটির এই প্রবাসী নেতা বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি চাইবো এবং রাষ্ট্রসংঘের সদস্য হওয়ার চেষ্টা করে যাবো। আশা করছি, বহু দেশ আমাদের স্বাধীনতায় স্বীকৃতি দেবে। ভারতের ছোট্ট রাজ্যগুলোর মধ্যে মনিপুর অন্যতম। ২৮ লাখ জনসংখ্যার ভূখণ্ডটি ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার্স স্টেট’- এর অন্তর্ভুক্ত।
সশস্ত্র সংঘাত ও উত্তেজনায় বহু বছর ধরে এই সাত রাজ্যে অস্থিরতা চলছে।সেখানে শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে। স্বায়ত্তশাসন থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদের দাবি জানিয়ে আসছে তারা। মনিপুরে হিংসা একটা নৈমিত্তিক কাজেরই অংশ হয়ে গেছে। এর কারণ এখানে জাতিগত মিশ্রণও জোরালো। সেখানকার নাগা, মৈতৈ, কুকি ও পাঙনরা তাদের সাংস্কৃতিক স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সমারজিত জানিয়েছেন, তাঁদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে বিশ্ব থেকে সমর্থন পাবেন বলে আশা করছেন। তার মতে, আমরা নিজেদের মাটিতে মুক্ত না, আমাদের ইতিহাস ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতির বিলুপ্তি ঘটছে।